পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বুলবুল ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা, ত্রাণ বণ্টন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্গঠন নিয়ে কোলাঘাটে বলাকা মঞ্চে এদিন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা ছাড়াও রাজ্য সরকারের ন’টি দপ্তরের প্রধান সচিব উপস্থিত ছিলেন। কাঁথির সংসদ সদস্য তথা দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী, তমলুকের সংসদ সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারী, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিধায়করা, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ বণ্টন, খাদ্য, স্বাস্থ্য, কৃষি সহ অন্যান্য দপ্তরের জেলার অফিসাররা, কাঁথি ও হলদিয়া মহকুমার অন্তর্গত সবকটি ব্লকের বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উপস্থিত ছিলেন।
বুলবুল ঝড়ের পর ছ’দিন কেটে গেলেও এখনও খেজুরি-২, দেশপ্রাণ ব্লক সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা সরব হন। বৈঠকে দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তরুণ জানা দাবি করেন, ৫০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীম মণ্ডলের বক্তব্য, পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৪০ শতাংশ গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি । শুভেন্দুবাবুও ওই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন, দারিয়াপুর, নীচকসবা, কালীচরণপুর ও সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক হয়নি। এনিয়ে মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার চেয়ারম্যান কাম সিএমডি শান্তনু বসু এদিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বণ্টন সংস্থার তমলুকের রিজিওনাল ম্যানেজার শ্যামল হাজরাকে ওই কাজে আরও বেশি উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। এখনও অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে রয়েছে। ধানজমির উপর খুঁটি থাকায় সেটি তোলা যাচ্ছে না। এরকম কিছু জায়গায় সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেন বণ্টন সংস্থার সিএমডি।
রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি জানান, তাঁর বিধানসভা এলাকায় চার হাজার পান বরজের মধ্যে দু’হাজার বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিডিওদের পক্ষে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পান বরজের তালিকা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। পঞ্চায়েতস্তরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা সংগ্রহ করা হোক। এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস বলেন, বুলবুল ঝড়ে এগরা-১ ও ২ ব্লকের অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসব রাস্তা জরুরি ভিত্তিতে সারানোর ব্যবস্থা করা হোক। খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল বৈঠকে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বুলবুলের সময় দেশপ্রাণ ব্লকের আঁউরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাউবনী গ্রামের এক মৎস্যজীবী, কাঁথি-৩ ব্লকের লাউদা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিল্লিবাড়ি গ্রামের মৎস্যজীবী চন্দন দাস ও কানাইদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের জগুদাসবাড় গ্রামের শম্ভু দাস ট্রলারে মাছ ধরতে গয়ে সাগরে নিখোঁজ। এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, তিনজন মৎস্যজীবী নিখোঁজ আছেন। এনডিআরএফ টিম তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে। বুলবুল ঝড়ে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকার দু’দফায় মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা সাহায্য করেছে। মৃতার ছেলেকে কলকাতায় চিকিৎসা করানো হয়েছে। সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যাতে দ্রুত বিমার টাকা পান, সেব্যাপারে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খটিগুলিকেও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে, এদিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি এলাকা থেকে এক মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।