কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর থানার রঘুনাথপুর এলাকা থেকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সত্যনারায়ণ শরকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এলাকার যথেষ্ট পরিচিত ডাক্তারবাবুর গ্রেপ্তারে হতাশ স্থানীয় বাসিন্দারা। একইভাবে দুর্গপুর থানার সি জোন এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় ছবিলাল ঠাকরিকে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। সেই সময় ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়েছিল। বিভিন্ন এলাকায় ভুয়ো চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছিল। এই অভিযান চলেছিল দুর্গাপুরেও। তৎকালীন দুর্গাপুর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য লাভলি রায় তৎকালীন মহকুমা শাসকের কাছে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের নামে অভিযোগ করেন। এরপরেই যৌথ টিম গঠন করে অভিযান শুরু হয় দুর্গাপুরজুড়ে। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, কারও হোমিওপ্যাথি ডিগ্রি রয়েছে অথচ সে চিকিৎসা করছে অ্যালোপ্যাথির। কেউ কেউ আবার প্রেসক্রিপশনে ভুয়ো ডিগ্রিও লিখছে। অভিযানে গিয়ে সদস্যরা দেখতে পান, কারও কাছে লেবার টেবিল, প্রেগনেন্সি কিট, ড্রেসিং সেট ইত্যাদি রয়েছে। তা দেখার পরই চোখ কপালে ওঠে সদস্যদের। তারপরেই প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ মতো দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ করেন তৎকালীন এসিএমওএইচ বর্তমানে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস। পাঁচ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিস খোঁজ শুরু করলেও তারা পালিয়ে যায়। তারপর থেকে ওই অভিযুক্ত চিকিৎসকদের খোঁজ পায়নি পুলিস। অবশেষে প্রায় দু’বছর পর তাদেরই মধ্য থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হল পুলিস। তাদের বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। বুধবার তাদের বিচারক সুজয় কুমার সরকারের এজলাসে তোলে পুলিস। সরকারি আইনজীবী সিদ্ধার্থ বসু অভিযুক্তদের পুলিসি হেফাজতে নেওয়ায় আবেদন জানান। অন্যদিকে অভিযুক্তদের আইনজীবী দেবব্রত সাঁই জামিনের আবেদন জানান। শেষমেশ বিচারক অভিযুক্তদের চারদিনের পুলিসি হেফাজত দিয়েছে বলে জানান সিদ্ধার্থবাবু।
তবে এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ভুয়ো চিকিৎসকদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে। বিশেষ করে ২০১৭ সালে এনিয়ে ব্যাপক ধরপাকড়ের জেরে ভুয়ো চিকিৎসকরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল। তারপর বেশ কয়েক বছর ধরে দামোদরে বহু জল গড়িয়েছে। বিষয়টি ক্রমশ আড়ালে চলে যেতেই ফের কি ভুয়ো চিকিৎসকদের দাপট শুরু হয়েছে সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকেরই দাবি, দুর্গাপুর, আসানসোলজুড়ে ফের গজিয়ে উঠছে ভুয়ো ডিগ্রিধারীদের ডাক্তারখানা। দুর্গাপুরের মতো মেডিক্যাল হাব থাকা এলাকায় এদের বাড়বাড়ন্ত কীভাবে বজায় রয়েছে তা নিয়ে নানা মত রয়েছে। অনেকেই অভিযোগ, এখনও বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের চিকিৎসার ভরসা বলতে এরাই। অনেক সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের অত্যধিক ফি তাদের এসব স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে যেতে বাধ্য করে। তবে অন্যমতও রয়েছে, অনেকেরই দাবি, এই সব চিকিৎসকদের মধ্যে অনেকেই ভালো রোগনির্ণয়ও করে।
রঘুনাথপুর এলাকার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, শর ডাক্তার যথেষ্ট ভালো চিকিৎসা করে। বাইরের থেকেও রোগীরা এখানে আসত।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, শুনেছি দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন সরকারি হাসপাতালগুলির পরিষেবার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ এখান থেকে পরিষেবা নিতে পারেন।