নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
রেল কর্তৃপক্ষ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, এদিনের ঘটনায় পাঁচজন যাত্রী জখম হয়েছেন। ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে ফুটওভারব্রিজের উপর এই ঘটনা ঘটেছে। ৬৩৫১৯ আপ বর্ধমান–আসানসোল প্যাসেঞ্জার ট্রেন দুপুর ৩টে ১০মিনিট নাগাদ নির্ধারিত সময়ে ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। দুপুর ৩টে ২০মিনিট নাগাদ ছেড়ে যায়। অন্যদিকে, দুপুর ৩টে ১৪ মিনিট নাগাদ ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ডাউন পূর্বা এক্সপ্রেস ঢোকে। পূর্বা এক্সপ্রেসের যাত্রীরা ফুটওভারব্রিজ ধরে উপরে উঠছিলেন। সেই সময় আপ বর্ধমান–আসানসোল প্যাসেঞ্জারের যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ওই ফুটওভারব্রিজ ধরেই নীচের দিকে নামতে যান। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা। রেলের চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসাও করেন। তারপর জখমদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, একদল যাত্রী উপরের দিকে ওঠায় এবং একদল হুড়োহুড়ি করে নীচের দিকে নামার চেষ্টা করায় ফুটওভারব্রিজের উপর ব্যাপক ভিড় হয়ে যায়। সেখানে যতজন একসঙ্গে ওঠানামা করা সম্ভব, তার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী উঠে পড়েন। অত্যধিক ভিড়ের চাপে ফুটওভারব্রিজ পুরো স্তব্ধ হয়ে পড়ে। শুরু হয় ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি। মহিলা ও শিশুরা কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। দম বন্ধ করা পরিস্থিতিতে ফুটওভারব্রিজের উপরেই জ্ঞান হারান এক প্রসূতি। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হতে পারে, এই আশঙ্কায় অনেকেই ফুটওভারব্রিজের পাশে লোহার রেলিং গলে নীচে ঝাঁপ দেন। প্ল্যাটফর্মে পড়েও কয়েকজন চোট পান।
এই অবস্থা দেখেই রেলপুলিস এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা দৌড়ে যান। অত্যধিক ভিড়ে গোটা ফুটওভারব্রিজ স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় রেলপুলিসও উঠতে পারেনি। পাশ দিয়ে লোহার রড ধরে তারা ফুটওভারব্রিজের পাশে ওঠে। সেখান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেলপুলিস ও সিভিক ভলান্টিয়াররা যাত্রীদের টেনে টেনে বের করেন। ভিড় হালকা হাওয়ার পর ফুটওভাব্রিজে উঠে পরিস্থিতি সামাল দেন। জখমদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
যাত্রীদের বক্তব্য, ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে যে ফুটওভারব্রিজ রয়েছে, তা খুব একটা বেশি চওড়া নয়। এই ফুটওভারব্রিজে হাওড়া ও আসানসোলের দিকে দু’দিকে দু’টি ওঠা-নামার সিঁড়ি ছিল। একদিকের সিঁড়ি অনেকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে চলমান সিঁড়ি বসানোর কাজ হচ্ছে। এর ফলে, শুধুমাত্র একদিকের সিঁড়ি দিয়েই এখন যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। বর্ধমান স্টেশনে সারাবছরই যাত্রীদের অত্যধিক চাপ থাকে। এর ফলে অফিস টাইমে এবং বিকেলের দিকে প্রতিদিনই এই ধরনের হুড়োহুড়ি হচ্ছে। তাছাড়া ট্রেন ছাড়ার ঘোষণাও করা হয় প্রায় শেষমুহূর্তে। ফলে অনেকেই ট্রেন ধরার জন্য পড়ি কি মরি করে দৌড় লাগান। এই নিয়ে উল্টোদিকে যাত্রীদের সঙ্গে প্রায়ই ধাক্কাধাক্কি হয়। কিন্তু, পরিস্থিতি মোকাবিলার কোনও চেষ্টাই রেল কর্তৃপক্ষ করছে না। চলমান সিঁড়ির কাজও হচ্ছে ঢিমেতালে।
যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধমান স্টেশনে ৩তিনটি রেলওভারব্রিজ রয়েছে। কিন্তু, বহু যাত্রী সেই ওভারব্রিজ ব্যবহারই করেন না। ঘটনাটি যাত্রীদের হুড়োহুড়ির জন্যই ঘটেছে।