গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন সমুদ্র উত্তাল ছিল। দুপুরে ভাটার সময় হাতে গোনা পর্যটক সমুদ্রস্নান সারেন। ঘাটগুলিতে কড়া পুলিসি নজরদারি ছিল। অধিকাংশ পর্যটকই ছিলেন হোটেলেই বন্দি। শুক্রবার বিকেলের পর ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বেড়ে যেতে পারে এবং পাশাপাশি তিনদিন উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টি হবে বলে আগেই প্রশাসনিক সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছিল। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ঝড়ের গতিবেগ তেমন ছিল না।
এদিন সকাল থেকে মাইকিং করে পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলা হয়, বুলবুলের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস বাড়বে এবং সমুদ্র উত্তাল হবে। আপনারা কেউ জলে নামবেন না। মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবেন না। নিরাপদ দূরত্বে আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
জেলা প্রশাসন ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের পক্ষ থেকে আজ, শনিবার ও আগামীকাল রবিবার সমুদ্র উপকূল বরাবর পর্যটক, স্থানীয় বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের যাবতীয় ক্রিয়াকলাপ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রামনগর-১ ব্লকের দীঘা উপকূল সহ রামনগর-২, কাঁথি-১, দেশপ্রাণ ও খেজুরি-২ ব্লক প্রশাসনকে একইভাবে জেলা প্রশাসনের তরফে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর(এনডিআরএফ) একটি দলও দীঘায় এসেছে। এদিকে সতর্কবার্তা জারি হওয়ার পর থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে ট্রলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও বন্দরগুলিতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, মরশুম শেষের মুখেও আবার সতর্কবার্তা জারি হওয়ায় ট্রলারগুলি ফিরে আসছে। এতে ফের ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এদিকে, প্রশাসনের সতর্কবার্তা জারি হওয়ার পর বেশ কিছু পর্যটক দীঘা ছেড়ে চলে গেলেও অনেকেই এখনও রয়ে গিয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য, উত্তাল সমুদ্র দেখা। কলকাতার বাঙ্গুর থেকে দীঘায় আসা এক পর্যটক রমেন গাইন বলেন, আমরা ৫ নভেম্বর দীঘায় বেড়াতে এসেছি। বেড়িয়েই ফিরব। প্রশাসন তার কর্তব্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের কথা প্রচার করছে। যদি কোনও দুর্যোগ বা অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়, নিশ্চয়ই তার মোকাবিলা করব। পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তাছাড়া দীঘা এখন অনেক সুরক্ষিত। আগের মতো পরিস্থিতি নেই। কলকাতার বাসিন্দা আর এক পর্যটক অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা গত ৬ নভেম্বর দীঘায় বেড়াতে এসেছি। প্রশাসনের সতর্কবার্তার কথা জানি। সেরকম যদি ঝড়-ঝঞ্ঝা হয়, তাহলে আমরা হোটেলেই থাকব। কিন্তু দীঘায় থেকেই সবকিছু উপভোগ করতে চাই।
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপকূলবর্তী এলাকার সমস্ত রেসকিউ সেন্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলবর্তী এলাকার গ্রামগুলিতে শুকনো খাবার, ত্রিপল এবং চাল মজুত করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার সবক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও সংশ্লিষ্ট থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের জেলা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় আগাম কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াও উদ্ধারকাজ, আশ্রয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা সহ সমস্ত প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছে।