ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, বেলিয়াতোড়ে খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কী কারণে খুন বা ওই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের অনুমান, পারিবারিক বিবাদ থেকেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গাজলঘাটি থানার পাবড়াডিহি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম মণ্ডল ওই গ্রামেরই মিঠু মণ্ডলকে বিয়ে করেন। পেশায় গাড়ির চালক উত্তমবাবুর সঙ্গে বেশ শান্তিতেই সংসার করছিলেন মিঠুদেবী। বিয়ের কয়েক বছর পর শ্যালকের স্ত্রী মামনি মণ্ডলের সঙ্গে উত্তমবাবুর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর সাতেক আগে মিঠুদেবীকে ছেড়ে মামনিদেবীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন উত্তমবাবু। তারপর বেশ কিছুদিন ধরেই বেলিয়াতোড়ের একটি কাঠমিলের লরি চালানোর কাজ করছিলেন। বছরখানেক ধরে উত্তমবাবু দ্বিতীয় পক্ষের বউকে নিয়ে বেলিয়াতোড়ের রাধাবাজারে একটি ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। ওই বাড়িতে দিন ১৫ ধরে প্রথম পক্ষের বড় ছেলে অজয়ও থাকছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ পাল বলেন, বুধবার বিকেলে উত্তমবাবুদের বাড়িতে কয়েকজন লোক আসে। তারপর থেকেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। সন্ধ্যায় সময় ঝগড়া চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। তারপর হঠাৎ করে সবাই চুপ করে যাওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর আমরা কয়েকজন গিয়ে দেখি, মামনি ঘরের উঠানের কাছে পড়ে রয়েছে। বিকেলে আসা সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। ওই সময় আমরা গোবিন্দ মণ্ডলকে পাকড়াও করে থানায় খবর দিই। পুলিস এসে মামনিকে উদ্ধার করে বেলিয়াতোড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই পুলিস মৃতার প্রথম পক্ষের ছেলে ও তার মাকে প্রথমে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে গ্রেপ্তার করে। আমাদের পাড়ায় এরকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।
এদিন আদালতে তোলার সময় মিঠু মণ্ডল বলে, আমি গ্রামের বাড়িতেই থাকতাম। বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তম কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর মামনি ফোন করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। বুধবার দুপুরেও একইভাবে গালিগালাজ করে। তার প্রতিবাদ জানাতেই আমরা এখানে আসি। এখানে আমাদের দেখার পরেও মামনি গালিগালাজের পাশাপাশি আমাকে ও ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এনিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার সময় প্রথমেই মামনি আমার পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। রাগে আমিও পাল্টা চড় মারি। কানের গোড়ায় ওই চড় লাগার পরেই মামনি থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাতে ভয় পেয়ে আমরা পালিয়ে যাই।
মিঠু মণ্ডল কেবল চড় মারার ফলে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও পুলিস জানিয়েছে, মৃতার শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের পাশাপাশি গলায় কালসিটের দাগ রয়েছে। মারধরের সময় গলায় দড়ি বা কাপড় জাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে মামনিদেবীকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তা পরিষ্কার হবে।