রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু বলেন, এটা সমগ্র নদীয়াবাসীর জন্য খুবই খুশির খবর। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আমরা দু’টি ভেসেল পাচ্ছি। এগুলি খুবই বড়। আমরা আশাবাদী, নবদ্বীপের রাসের আগে এই দু’টি ভেসেল নদীতে চলে আসবে। ভাড়াও যাতে খুব বেশি না হয়, সেটাও আমরা দেখছি। তারজন্য নির্দিষ্ট একটি কমিটিও রয়েছে।
নবদ্বীপ ঘাটটি জেলার মধ্যে অন্যতম বড় ঘাট। ঘাটটি জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। নৌকা বা ভুটভুটির ঘাটগুলিতে নদী পারাপার করা যায়। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, বেশ কয়েক মাস আগে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে সেখানে দু’টি ভেসেল নামায়। এক একটি ভেসেলের যাত্রী বহনের ক্ষমতা ৮০ জন। তখনই বলা হয়েছিল, আরও দু’টি ভেসেলের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিশ্রুতি মতো আসতে চলেছে দু’টি ভেসেল। জেলা পরিষদের এক কর্তা বলেন, ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি ভেসেল নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ভুটভুটির ব্যবহার কমাতেই রাজ্য থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দু’টি ভেসেলের নামকরণও হয়ে গিয়েছে। একটির নাম, এম ভি মা সারদা, অন্যটি, এম ভি মহেশ কন্যা।
রাস উৎসব হাতেগোনা আর কয়েকটা দিন বাকি। তারপরেই রাস উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠবেন এলাকার বাসিন্দারা। গঙ্গার তীরের মায়াপুর ও নবদ্বীপে লাখ লাখ মানুষের ভিড় জমবে। তার ঠিক আগেই এসেছে ভেসেল আসার খবর। তাতে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। মায়াপুর-নবদ্বীপ, জোড়া পর্যটন কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা এখন আন্তর্জাতিক স্তরের। সারা বছর ধরে গোটা পৃথিবী থেকে বহু মানুষ নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে নবদ্বীপে ছুটে আসেন। রথযাত্রা দিয়ে এখানে পর্যটন মরশুমের শুরু। তারপর পরপর ঝুলন, জন্মাষ্টমী, রাস, দোল উৎসব। সবচেয়ে বেশদিন ধরে চলে দোল উৎসব। দোল উৎসব এখানে ১৫ দিন ধরে চলে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নবদ্বীপে লাখ লাখ মানুষের আনাগোনা হয়। শতাধিক মঠমন্দির থেকে বের করা হয় পরিক্রমা। এক একদিনে প্রায় এক লাখ মানুষ গঙ্গা পারাপার করেন। ফলে নতুন ভেসেল আসায় সবদিক থেকেই নদীয়াবাসীর সুবিধা হতে চলেছে। সামনেই নবদ্বীপের রাস উৎসব। তা খুবই জনপ্রিয়। চৈতন্যধাম নবদ্বীপে বিশেষভাবে রাস পালিত হয়। পূর্ণিমার ভরা চাঁদের রাতে বিশুদ্ধ তন্ত্রমতে শতাধিক শক্তিমূর্তির সাড়ম্বর পুজো হয়। সঙ্গে রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে ওঠা উৎসবের উদযাপন। রাস পূর্ণিমার রাতে নবদ্বীপে কমবেশি ১৫০ বিচিত্র রূপের শক্তিমূর্তির পুজো হয়। যে কারণে অনেকে নবদ্বীপের রাসকে শাক্ত রাস বলে থাকেন। শোনা যায়, নদীয়া কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব কালে (১৭২৮-১৭৮২) নবদ্বীপের রাসের এত জাঁকজমক শুরু হয়। এবছর রাস উৎসব শুরু হবে আগামী ১২ নভেম্বর। তারজন্য যদিও জমায়েত হবে ১১ নভেম্বর থেকে। ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত হয়ে এলাকায় মানুষের জমায়েত থাকবে। সরকারি হিসাব বলছে, ওই সময় প্রত্যেকদিন ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার মানুষের সমাগম হবে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যার কয়েকগুণ মানুষের জমায়েত হবে। স্বাভাবিকভাবেই সেই উৎসবের আগে ভেসেল নামলে সকলের জন্যই তা ভালো হবে। নতুন ভেসেল আসার খবরে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, উৎসবের আগে নতুন ভেসেল আসলে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধা হবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে বেশ কয়েক জায়গায় নৌকাডুবির ঘটনায় অনেক যাত্রীর প্রাণহানি হয়েছে। তাই যাত্রী পরিষেবার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভেসেল দিয়ে যাত্রী পারাপারের কথা চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। তারপর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ভুটভুটি নৌকার বদলে ভেসেল চালানোর কথা ঘোষণা করেন। সেই সিদ্ধান্তই একে একে কার্যকর হচ্ছে। নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে এই ভেসেল নামানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। এতে দূষণও অনেক কমবে।