গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্তি জেলাশাসক(পঞ্চায়েত) প্রতিমা দাস বলেন, এর আগে আমরা জেলায় সব পঞ্চায়েত এলাকা মিলিয়ে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার পরিবারকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসেছিলাম। তাঁরা প্রকল্পের সুবিধে পান। এবার আমরা আরও বেশি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে অনেক বেশি পরিবারকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছি। ইতিমধ্যেই আমরা এক লক্ষ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, কাজ করতে গিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এলাকার পঞ্চায়েত কর্মীরা এই কার্ড করানোর জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্লিপ দিয়ে আসার পরও অনেকেই এই কার্ড করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাঁদের কাছে আমাদের আবেদন, অবিলম্বে নিজের নিজের পঞ্চায়েত এলাকায় যখন এই প্রকল্পের ক্যাম্প হবে, সেখানে সশরীরে গিয়ে হাতে হাতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড নিয়ে আসুন। ভবিষ্যতে তা কাজে লাগবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা প্রকল্পের আওতায় এই জেলার বহু পরিবারই অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। মূলত ওই কার্ড থাকলে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ ছিল। গত বছর শেষের দিকে এই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, লক্ষ লক্ষ মানুষ কার্ড করিয়েও আখেরে চিকিৎসা ব্যবস্থায় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। অনেকে বিষয়টি জানেনও না। এই সব উপভোক্তার পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার এগিয়ে এসেছে। তারা এই সব উপভোক্তাকে নতুন করে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওয়ায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিচ্ছে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এলে বাসিন্দারা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা প্রকল্পের চেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা পাবেন। কোনও পরিবারের লোকজনের কাছে এই প্রকল্পের কার্ড থাকলে তারা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পাবেন। সাধারণ গরিব মানুষের কাছে যা অনেকটাই। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি কলকাতার নামী কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও এই পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলার অনেক নার্সিংহোমও এর আওতাভুক্ত। সেখানেও উপভোক্তারা চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।
এছাড়া এসইসিসি-র মাধ্যমে জেলায় আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া লোকজনের বিষয়ে সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই তথ্য প্রশাসনের কাছে রয়েছে। যাঁরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদেরও এবার এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্প চালু হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলায় এক মাসের মধ্যেই প্রায় এক লক্ষ পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া এক এজেন্সির মাধ্যমে নাম নথিভুক্তকরণ ও কার্ড বিলি করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত অফিসে ক্যাম্প করে পরিবারের লোকজনের নাম নথিভুক্ত করে কার্ড বিলি করা হচ্ছে। তার আগে পঞ্চায়েত কর্মীরা গিয়ে বাড়ি বাড়ি স্লিপ দিয়ে আসছেন। ওই স্লিপ দেখিয়ে পরিবারের লোকজন পঞ্চায়েতে হওয়া ক্যাম্প অফিসে গিয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। অনেকেই স্লিপ নেওয়ার পরও নাম নথিভুক্ত করতে চাইছেন না। ইতিমধ্যেই ঘাটাল মহকুমা সহ জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে এই প্রকল্পের কাজ হয়ে গিয়েছে।
তবে, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, কেশপুর সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে এখনও এই কাজ বাকি রয়েছে। সেখানেও খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, স্লিপ নেওয়ার পর ক্যাম্পে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করে আসার জন্য। না হলে বাসিন্দারা সরকারি এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত থেকে যাবেন।