পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া ব্লকে ৪৬জন, নন্দকুমার ব্লকে ৩৫জন, পাঁশকুড়া ব্লকে ৫৫জন, কোলাঘাট ব্লকে ৪১জন, তমলুক ব্লকে ১৯জন, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে ১৯জন, ময়নায় ১০জন, সুতাহাটায় ন’জন, মহিষাদলে ১৩জন, এগরা-১ব্লকে ১৭জন, এগরা-২ ব্লকে ৩২জন, পটাশপুর-১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ৩ ও ১৬জন, ভগবানপুর-১ ব্লকে ছ’জন, পাঁশকুড়া পুরসভায় ১১জন, তমলুক পুরসভায় সাতজন, হলদিয়া পুরসভায় ২০জন এবং এগরা পুরসভা এলাকায় তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার অন্তর্গত চণ্ডীপুর ব্লকে পাঁচজন, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ৪৬জন, নন্দীগ্রাম-২ব্লকে চারজন, কাঁথি-১ ব্লকে ১৮জন, দেশপ্রাণ ব্লকে ৩৬জন, কাঁথি-৩ব্লকে চারজন, ভগবানপুর-২ ব্লকে চারজন, রামনগর-১ ও ২ ব্লকে ১২জন, খেজুরি-১ব্লকে ছ’জন এবং কাঁথি পুরসভা এলাকায় ছ’জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত জানুয়ারি মাস থেকে জেলায় ১০হাজারের বেশি জ্বরে ভোগা রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। জেলায় তমলুক জেলা হাসপাতাল ছাড়াও পাঁশকুড়া ও নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কাঁথি ও এগরা মহকুমা হাসপাতালেও ডেঙ্গুর পরীক্ষা হচ্ছে। আবার বেশকিছু পরীক্ষা হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা এলাকায় মোট ৩৬২জনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু মিলেছে। তারমধ্যে ২৫৪টি সরকারি হাসপাতালে এবং বাকি ১০৮টি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা হয়েছে। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন ব্লকে ১৪১জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে তিনটি বাদে সবকটি সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া ব্লকের লালচক, গুরিয়া, গোটপোতা, ধুলিয়াপুর, তেঘড়ি, খেশারি, ভুঁইঞা বাড়, উরিয়াগড়, রাতুলিয়া, পুলসিটা, বিজয়রামচক, আটবেড়িয়া এলাকা, হলদিয়া ব্লকের ডালিম্বাচক, কাষ্ঠখালি ও দেউলপোতা এলাকায় ডেঙ্গুর দাপট সবচেয়ে বেশি। একইভাবে হলদিয়া পুরসভার ১, ৪, ৫, ৯, ১৫, ১৭, ২৪ ও ২৬নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ডেঙ্গু থাবা বসিয়েছে। হলদিয়া শহর থেকে যে ২০টি ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে রয়েছে, তার সবকটি পরীক্ষা হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। একইভাবে পাঁশকুড়া পুরসভার ১ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড, এগরা পুরসভার ১১নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে।
নন্দকুমার ব্লকের রাউতৌড়ি, কাঞ্চন, মহম্মদপুর, চকজিঁয়াদিঘি, নারাদাঁড়ি, কামারদা, শিবদত্তপুর ও নারায়ণপুর, বঁহিচবেড়িয়া, ব্যবত্তারহাট, শীতলপুর ও বাসুদেব এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর মিলেছে। কোলাঘাটের বরদাবাড়, গোপালনগর, মাধবপুর, দক্ষিণ জিয়াদা, ঝোকুরকুল, খন্যাডিহি, নাগুরিয়া, বৃন্দাবনচক, বেদবেড়িয়া ও বিষ্ণুপুর এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপের খবর স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে এসেছে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গড়চক্রবেড়িয়া, আমড়াতলা, গোবিন্দপুর, সামসাবাদ, দক্ষিণ ঢেকুটিয়া ও দাউদপুর, দেবীপুর, আমগাছিয়া, কাঞ্চননগর, মহম্মদপুর, নীলপুর ও হোসেনপুর এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৪০৯জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবছর অক্টোবর মাসেই সেই সংখ্যা ছাপিয়ে পাঁচশোর গণ্ডি টপকে গিয়েছে। গত বছর মোট ১০হাজার ৩৬০জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছিল। এবছর ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যাটাও ছাপিয়ে গিয়েছে। জেলায় কিছু কিছু এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম-১ ও নন্দকুমার ব্লক নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা স্বাস্থ্যদপ্তরের। সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিএমওএইচদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়াও আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি মাসে দু’বার করে গিয়ে মানুষজনকে সচেতন করছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমাদের জেলায় এবছর এখনও পর্যন্ত ৫০৩জনের ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। কিছু ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি। জ্বর হলেই সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়া উচিত। ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা সবধরনের কর্মসূচি নিচ্ছি।