গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিকে পুলিসকে ধৃত জেরায় জানিয়েছে, মৃত বন্ধুপ্রকাশ পালের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক ছিল। সে তাকে বুড়ো দা বলেই ডাকত। সাগরদিঘির বারালা গ্রামের বাড়িতে তাদের যাতায়াত ছিল। কিন্তু সে জিয়াগঞ্জের বাড়িতে কোনও দিনই আসেনি। খুনের দিনই প্রথমবার ঘরে ঢুকেছিল। তবে তার আগে এলাকার বর্ণনা শুনে সে রেইকি করে যায়। উৎপল গ্রামের অনেকের কাছেই শুনেছিল লেবুবাগানে একটি মন্দিরের পাশে প্রকাশবাবুর একতলা বাড়ি। সেইমতো সে আন্দাজেই ঘরে ঢুকেছিল। তবে জেরায় সে বিভিন্ন সময় বয়ান বদল করায় আধিকারিকরাও ধন্দে রয়েছেন। সে প্রথমে বলে, প্রকাশবাবু দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কোপানো হয়। পরে বলে তাঁর স্ত্রী বিউটি পালও দরজা খোলার সময় তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন। পরে তাঁকে চিনতে পেরে বিউটি নিজের বেডরুমে গিয়ে শুয়ে পড়েন। তিনি বেডরুমে যাওয়ার পরেই প্রকাশবাবুকে কোপানো হয়। পরে বিছানায় শুয়ে থাকা বিউটিদেবীকে কোপ মারা হয়। তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ওই দিন তিনি অসুস্থও ছিলেন। সেকারণে প্রতিরোধ করতে পারেননি। তিনি যে ঘটনার দিন অসুস্থ ছিলেন তা পুলিস পরিচারিকার কাছে থেকেও নিশ্চিত হয়েছে। ওই পরিচারিকা বলেন, ওই দিন গৃহবধূর শরীর খারাপ ছিল বলে রান্নাও করতে পারছিলেন না। আমাকে রান্না করতে বলেন। তবে আমি রান্না করায় প্রকাশবাবু রান্না শুরু করেন। মাছ বেছে দিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। ওই দিন আমাকে ওঁরা দেড়টা সময় খেতে আসার জন্যও বলেছিল। উৎপল জেরায় জানিয়েছে, বিউটিদেবীকে খুন করার সময় তাঁদের ৬ বছরের ছেলে ভয়ে দেওয়ালের দিকে মুখ করেছিল। সে চিৎকার করেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে তার গলাতেও কোপ মারা হয়। সে লুটিয়ে পড়ে। তবে তার মৃতদেহ যেখানে পড়েছিল সেখানে তাকে মারা হয়নি। তাদের বেডরুমেই ৬বছরের ওই নাবালককে মারা হয়। সে বেরিয়ে যাওয়ার পরে এলাকার কেউ একজন কোলে তুলে নিয়ে আসেন। তিনি ভেবেছিলেন সে হয়তো বেঁচে রয়েছে। ততক্ষণে অবশ্য সে মারা গিয়েছিল। পুলিসের দাবি, মৃত নাবালককে সরিয়ে আনার জন্যই মেঝের এক জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধেছিল।
প্রসঙ্গত, ধৃত গ্রেপ্তার হওয়ার পরে পুলিসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল বিউটিদেবী বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কোপ মারার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। কিন্তু পরে বয়ান বদল হয়। আধিকারিকদের দাবি, আমজনতার মধ্যে সন্দেহ থাকলেও তারা নিশ্চিত খুনের পিছনে একজনই জড়িত ছিল। তার সমস্ত প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কোর্টে তা পেশ করা হবে। এক আধিকারিক বলেন, ঘরের মধ্যে ঘটনার পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি সে যেখানে প্যান্ট এবং টি-শার্ট ফেলেছিল সেখানেও নিয়ে যাওয়া হবে। প্যান্ট এখনও পাওয়া যায়নি। সেটাও খুঁজে বের করা হবে। তবে প্রকাশবাবুর উধাও হয়ে যাওয়া মোবাইল দু’টি কোথায় গেল তার সন্ধান এখনও আধিকারিকরা পাননি। তাঁদের দাবি, খুনের পর ঘর থেকে কেউ মোবাইল দু’টি চুরি করেছে। মোবাইল অন না করায় সে দু’টির টাওয়ার লোকেশন বোঝা যাচ্ছে না। অন্য কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্ধান পাওয়া যায় কিনা সে দিকটা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।