পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জিয়াগঞ্জে তিনজনকে খুন করার পরও উৎপলের এতটুকু আফশোস নেই বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিসকে সে বলে, ওদের মেরে আমার কোনও আফশোস হয়নি। পরিবারের সংসার খরচ জোগানোর জন্য নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেই রাজমিস্ত্রির কাজে নামি। এগরায় দেড় বছর ধরে কাজ করছি। মাঝে বোনের শরীর খারাপ হয়েছিল। তার চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত সময় কাজ করেছি। তারপরে টাকা জমিয়ে বিমা করেছিলাম। সেই টাকা বুড়োদা (মৃত বন্ধুপ্রকাশ পালের ডাকনাম) জমা দেয়নি শুনে রেগেছিলাম। তারপর ও গালিগাজ করায় আর মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। ওদের তিনজনকে খুন করার পর কী করে বাড়ি থেকে বেরব বুঝতে পারছিলাম না। ঘরের ভিতরেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে একজন দরজায় টোকা দেয়। তাতে ভয় পেয়ে ছুটে পালিয়ে যাই।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে উৎপল জেরায় তেমন কথা না বললেও এখন স্বাভাবিক ভাবেই সব কিছু বলছে। তারপরেও বেশ কিছু মিসিং লিঙ্ক থেকে গিয়েছে। প্রথমত, বন্ধুপ্রকাশ পালের দু’টি মোবাইল কোথায় গেল তার হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি। ধৃত জেরায় জানিয়েছে, সে মোবাইল দু’টি নিয়ে যায়নি। তাহলে সেগুলি কোথায় গেল তার উত্তর পুলিস খুঁজে পাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, বিউটি পালের মৃতদেহ বিছানার মধ্যে শোয়ানো অবস্থায় কীভাবে থাকল সেটা নিয়েও রহস্য কাটেনি।
ধৃত জেরায় জানিয়েছে, বন্ধুপ্রকাশবাবুকে কোপ মারার পরেই অন্য ঘরে বিছানার পাশে থাকা বিউটিদেবীর ঘাড়ে কোপ মারে। সেটা হলে তাঁর মৃতদেহ অন্যভাবে পড়ে থাকার কথা ছিল। তা না হয়ে দেহ শোয়ানো অবস্থায় ছিল। তৃতীয়ত, বিমার কাগজ কীভাবে উৎপলের ব্যাগে এল সেটাও পরিষ্কার নয়।
এক আধিকারিক বলেন, প্রথমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, উৎপল এই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল কি না। সেটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। জেরায় খুনের কথা সে বহুবার স্বীকার করে নিয়েছে। যে মিসিং লিঙ্কগুলি পাওয়া যাচ্ছে তা ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে এই ঘটনায় তার জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। ফেলে যাওয়া জুতো এবং ব্যাগ তার। সেটা প্রমাণিত হয়েছে। সদরঘাটের সিসি ক্যামেরায় তার জিয়াগঞ্জ আসার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এবিষয়ে পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, জেরায় উৎপল খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এত বড় ঘটনার পরেও সে স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্তকারীরা তাকে যা জিজ্ঞাসা করছে, তার উত্তর দিচ্ছে। খুনের পরে বাড়ি গিয়েও সে একইরকম স্বাভাবিক ছিল। সেই কারণে কেউই কোনও কিছু টের পায়নি বলে তদন্তকারীদের দাবি।