পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অতিরিক্ত পুলিস সুপার(হেডকোয়ার্টার) সৈয়দ মহম্মদ মামদোদুল হাসান বলেন, বসুদেব মণ্ডল খুনের ঘটনায় অনেকের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল। আমরা ভোররাত থেকে অভিযানে নেমেছিলাম। আমরা এফআইআরে নাম থাকা বিজয়কে পাই। তাকে গ্রেপ্তার করার সময় আমাদের উপর বোমাবাজি করা হয়। লাউড স্পিকারের সাহায্যে আমাদের কাজে সহযোগিতার জন্য স্থানীয়দের জানাই। কিন্তু, ওরা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। তাতে এসডিপিও, ওসি সহ তিন-চারজন জখম হয়েছেন। আমরা বিজয় ভুঁইঞাকে গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও লোকজন ছিল না। ভোররাতে যথেচ্ছ বোমাবাজির জন্য আমাদের টিয়ার সেল ফাটাতে হয়েছে।
এদিন বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জোটবদ্ধ হয়ে বোমা, লাঠিসোঁটা নিয়ে বাকচা গ্রামে উপপ্রধান শম্পা মণ্ডলের বাড়ি ভাঙচুর করে তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। ওই এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করে বিজেপি কর্মীরা। এরপর সশস্ত্র বিজেপি কর্মীরা বরুণা গ্রামে গিয়ে নিহত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বসুদেব মণ্ডলের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। তাঁর শ্যালক পেশায় এমআর ডিলার স্বপন ভৌমিক কোনওরকমে কেলেঘাই নদী পেরিয়ে ভগবানপুর থানা এলাকায় পাঠিয়ে প্রাণ বাঁচান।
এদিকে উপ প্রধানের স্বামীকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়তে আরও অতিরিক্ত বাহিনী ময়না থেকে বাকচায় নিয়ে যাওয়া হয়। একের পর এক ফোর্সের গাড়ি আসার খবরে দুষ্কৃতীরা উপপ্রধানের স্বামী বিকাশবাবুর কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে তাঁকে ছেড়ে দেয়। মুচলেকায় শম্পাদেবী উপপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে জানান বিকাশবাবু। সেইমতো শম্পাদেবী শুক্রবার ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দেওয়ার চিঠি ময়নার বিডিও এবং তমলুকের এসডিও-র কাছে পাঠিয়েও দেন।
সকালে পুলিস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর বাকচা, গোড়ামহাল, বরুণা, হালিশহর ও খিদিরপুর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় সব পঞ্চায়েত সদস্য সহ একঝাঁক স্থানীয় নেতা-কর্মী ঘরছাড়া হন। সেই তালিকায় পঞ্চায়েত সদস্য রবিন জানা, ভোলানাথ আগুয়ান, পঞ্চানন বর্মণ সহ অনেকেই আছেন। এদিন সকালে খিদিরপুরে সংঘর্ষের পর রাবার বুলেটের গুলি হাতে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ময়না থেকে বাকচা যাওয়ার রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার ফলে ওই রাস্তায় যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিন খিদিরপুর-হালিশহর এলাকার গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানোর অংশ পড়ে রয়েছে। গোড়ামহল এলাকায় রাস্তার ধারেই পড়ে রয়েছে বোমার বারুদ। সকালে যথেচ্ছ বোমাবাজির দাগ তখনও স্পষ্ট।
হালিশহরের বাসিন্দা তথা বিজেপি সমর্থক জয়দেব মণ্ডল বলেন, ভোর ৫টায় তৃণমূল কংগ্রেসের সশস্ত্র বাহিনী প্রথমে গ্রাম আক্রমণ করে। তাদের পিছনেই ছিল পুলিস। আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি। সকলেই বাড়িতে ছিলাম। প্রতিরোধ গড়তেই কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়। তাতে ৩০-৪০জন গ্রামবাসী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। মেয়েদের মারধর করা হয়। ময়না দক্ষিণ মণ্ডলের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত মিদ্দা বলেন, ভোর ৫টা ১০মিনিট নাগাদ সশস্ত্র তৃণমূলের বাহিনী গ্রামে আক্রমণ করে। পিছনে পুলিস ছিল। বিজেপির ২৩৪নম্বর বুথ সভাপতি বিজয় ভৌমিককে টানতে টানতে পুলিস ধরে নিয়ে যায়। তৃণমূল এবং পুলিস একসঙ্গে গ্রামে ঢুকেছিল। মাধবচক এলাকার বেশ কয়েকজন অবরোধ করার জন্য তাঁদের মারধর করা হয়।
ময়নার তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাজাহান আলি বলেন, বাকচায় এই মুহূর্তে আমাদের কেউ নেই। প্রত্যেকেই ঘরছাড়া। এলাকার রাশ বিজেপির দখলে রয়েছে। পুলিসের সঙ্গে আমাদের কর্মীদের থাকার দাবি অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন।