দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
লোকসভা পরবর্তী সময়ে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প থেকে নেওয়া কাটমানির অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। শাসকদলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রায়ই এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। কোথাও আবার বেগতিক বুঝে এই প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অর্থ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার বিনিমেয়ে নেওয়া কাটমানির অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে জনপ্রতিনিধিদের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উপভোক্তারা। হেনস্তা করা হয় জনপ্রতিনিধিদের। যা বেকায়দায় ফেলে শাসকদলকে।
এরই মধ্যে বীরভূম জেলায় এই প্রকল্পে কয়েক হাজার উপভোক্তার বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার জন্য নামের তালিকা আসে। কিন্তু, আর যাতে এই প্রকল্পে অনিয়ম না হয় সেজন্য খোদ অনুব্রত মণ্ডল জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, যাদের বাড়ি আছে, তারা যেন কোনওমতেই এই প্রকল্পে বাড়ি না পায়। সেটা দেখতে হবে। এরপরই ব্লক থেকে আধিকারিকরা পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে সেই নামের তালিকা ধরে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য কি না যাচাই করেন। সূত্রের খবর, পাকা বাড়ি আছে, এমন বেশ কিছু আবেদনকারীর নাম এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এতে অনেক জনপ্রতিনিধি ক্ষুব্ধ হন।
নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতে ৬৮৩ জনের নাম রেজিস্ট্রেশন করে পাঠানো হয়েছিল। সব ক’টিই অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু, পরে সরেজমিনে যাচাই করে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নয় এমন ১৯৬ জনের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। আর এতেই ক্ষুব্ধ হন জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গোটা ব্লক মিলিয়ে ২৫০ জনের নাম বাদ গিয়েছে। যার মধ্যে এই পঞ্চায়েতেরই ১৯৬ জন। এটা কী করে হয়?
এদিন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুলতা মণ্ডলের স্বামী মৃণাল মণ্ডল দলবল নিয়ে এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট সুশান্ত প্রামাণিকের কাছে আসেন। কেন নাম দেওয়া হল তা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় অফিসের মধ্যেই সুশান্তবাবুকে কিল ঘুসি মারতে শুরু করেন মৃণাল মণ্ডল ও তাঁর লোকজন। পরে তিনি বিষয়টি জানাতে বিডিও অফিসে যেতে গেলে বঞ্চিত উপভোক্তাদের দিয়ে তাঁকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ।
সুশান্তবাবু বলেন, বিডিও সাহেব যেমন নির্দেশ দিয়েছেন সেই ভাবেই সার্ভে করা হয়েছে। তাতে পাকা বাড়ি আছে এমন কিছু নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এখানে আমার কী করার আছে? অথচ এদিন উপপ্রধানের স্বামী অফিসে ঢুকে আমাকে মারধর করল। তিনি বলেন, ঘটনার সময় প্রধান নুরুল হোদা উপস্থিত থাকলেও আমাকে বাঁচাতে কোনও উদ্যোগ নেননি। ঘটনার কথা বিডিও এবং এসডিওকে জানানো হয়েছে।
ঘটনার পর এনিয়ে হইচই শুরু হতেই উপপ্রধানের স্বামী মোবাইলের সুইচ অফ করে দেওয়ায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে, প্রধান বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। তবে, শুনেছি মারধর করা হয়নি। উপপ্রধানের স্বামীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। বিষয়টি মিটে গিয়েছে।
অফিসের মধ্যেই সরকারি কর্মীকে মারধর ও হেনস্তার খবর পেয়ে পঞ্চায়েতে আসেন বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস। তিনি বলেন, বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়েছে। সেটা মিটেও গিয়েছে। তিনি বলেন, বাদপড়া নামের তালিকা ধরে ফের তদন্ত করা হবে। যেটা সঠিক হবে সেটা করা হবে। অন্যদিকে মহকুমা শাসক শ্বেতা আগরওয়াল বলেন, এই বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করব না।