বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
মঙ্গলবার ওই মহিলার নিদানে সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি অরন্ধন পালন করেন ওই দুই গ্রামের মানুষ। বুধবারও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রান্না চাপেনি কারও বাড়িতে। ঘটনার জেরে দুই গ্রামের আট থেকে আশি বয়সের সকলেই আতঙ্কে রয়েছেন। এদিকে, কুরিচায় গুজব ছাড়ানো হচ্ছে শুনে সন্ধ্যা নাগাদ নাদনঘাট থানার বিশাল পুলিস বাহিনী সেখানে যায়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে তারা দীর্ঘক্ষণ কথা বলে। পুলিস অলৌকিক বিষয়ে সকলকে গুজব ছড়াতে নিষেধ করে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, বিজ্ঞানের যুগে এমন ভরের কথা মানা যায় না। আমি প্রশাসন ও বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মকর্তাদের গ্রামে গিয়ে বিষয়টি সম্বন্ধে খোঁজ খবর নিতে ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে বলব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই গ্রামের বাসিন্দা দিব্যেন্দু শিট পারুলিয়া সব্জি বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে সাপে কামড়ায় বলে অভিযোগ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাঁকে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসক তৎক্ষণাৎ তাঁকে অ্যান্টিভেনাম ইঞ্জেকশন দেন। কুরিচার বেশ কিছু বাসিন্দা এদিন বলেন, দিব্যেন্দুকে সাপে কামড়ানোর খবরের কিছু সময় পরেই সুজাতা সরকার বুনোপুকুরে স্নান করতে নামেন। সেখান থেকে স্নান করে উঠে সাপের মতো আচরণ করে তিনি নাচতে থাকেন। ওই পুকুরপাড়ে বসে সুজাতাদেবী বলেন, ‘সাপে কাটা দিব্যেন্দুর কিছু হবে না’। ওকে স্বয়ং মা মনসা রক্ষা করছে। ওই পুকুর পাড়ে একটি মাটির মনসা বেদিও তিনি তৈরি করেন। বিকেল নাগাদ সাপে কাটা যুবক গ্রামে ফিরে আসে। তারপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে, ওই বধূর ‘অলৌকিক ক্ষমতার’ কথা। পরদিন ওই মনসাবেদিতে ধুমধাম করে পুজো অর্চনা শুরু হয়। গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি থেকে পুজোর নৈবেদ্য দেওয়া হয়। খবর ছড়িয়ে পাশের গ্রাম বাঁকিতেও। পুজো চলাকালীন ফের সুজাতা নিদান দেন, ‘পুজো না হওয়া পর্যন্ত ওই গ্রামের কোনও বাড়িতে রান্না করা চলবে না। পাশাপাশি সবাইকে নিরামিষ খেতে হবে।’ তারপর থেকে ওই বধূর নিদান মেনে চলছেন দুই গ্রামের বহু মানুষ। কেউই এর প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেননি।
কুরিচার বাসিন্দা অনিমা পাল বলেন, মা মনসার নির্দেশে গ্রামে বৃহস্পতিবার থেকে নিরামিষ খাওয়া চলছে। একই দাবি করেছেন ওই গ্রামের তারাপদ কাষ্ঠ, কাজল সরকার। তাঁরা বলেন, ভর চলাকালীন সুজাতা যা বলছেন, আমরা তা মেনে চলছি।
অন্যদিকে, বিয়ের আগেও তাঁর ভর হতো বলে এদিন স্বীকার করেন সুজাতা। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন। সুজাতা বলেন, ভরের সময় কী বলেছিলাম, এখন মনে করতে পারছি না।