গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
আগে এলাকার পালপাড়াগুলিতে দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পরই মাটির প্রদীপ তৈরি করার ধুম ছিল। প্রত্যেক মৃৎশিল্পীই প্রদীপ তৈরির বরাত পেতেন। কেউ কেউ ১০ হাজার পর্যন্ত প্রদীপ তৈরির বরাত পেতেন। ফলে সকাল থেকে পালপাড়ায় শুরু হয়ে যেত প্রদীপ তৈরি করার কাজ। এখন প্রদীপের চাহিদা না থাকায় মৃৎশিল্পীরা চিন্তিত। এখন অনেকেই প্রদীপ তৈরির বদলে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। এলাকার মৃৎশিল্পী অজয় পাল বলেন, আগে দুর্গাপুজোর পর থেকে মাটির প্রদীপের কাজ শুরু হয়ে যেত। আমি বাবা, কাকাদের সঙ্গে মাটির প্রদীপ তৈরি করা খুব ছোট থেকে শিখেছি। এখন মাটির প্রদীপের প্রচলন কমে গিয়েছে। এখন আর প্রদীপ তৈরি করতে হয় না বললেই চলে। এখন বরাতও সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই সেভাবে প্রদীপ তৈরির ব্যস্ততা নেই। তিনি বলেন, সেই সময় বাবা, কাকারা প্রদীপ তৈরি করতেন। মা, কাকিমারা সাহায্য করতেন। আমরাও ছোটবেলায় তাঁদের পাশে থেকেছি। প্রদীপ তৈরি করার পর মা কাকিমারা সেই প্রদীপ রোদে শুকাতে দিত। তারপর প্রদীপকে আগুনে পুড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় অর্ডার অনুযায়ী পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এখন সেই চাহিদা না থাকায় আমরা অনেকেই বিভিন্ন পেশায় চলে গিয়েছি। এলাকার চিকিৎসক প্রলয়কুমার ভট্টাচার্য, শিক্ষক সমীরকুমার দত্ত বলেন, আমরা ছোট থেকেই কালীপুজোর সময় পালপাড়া থেকে মাটির প্রদীপ আনতে যেতাম। সেগুলি দীপাবলির দিন বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় জ্বালানো হতো। সঙ্গে থাকত মোমবাতি। এখন সময় ও যুগ দুই বদলেছে। এগুলির পরিবর্তে এসেছে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক আলো। এলাকার যুবক অমিত ঘোষ বলেন, মাটির প্রদীপ একবার ব্যবহার করার পর আর ব্যবহার করা যায় না। ফলে প্রতিবার কিনতে হয়। এতে খরচ বেড়ে যায়। আর বৈদ্যুতিক আলো একবার কিনলে বেশ কয়েক বছর চলে যায় আর বাড়ির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায়। ফলে এখনকার প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দীপাবলিতে মাটির প্রদীপ বা মোমবাতি থেকে বৈদ্যুতিক আলো বেশি পছন্দ করে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার একটু নকশা করা প্রদীপের চাহিদা রয়েছে বলে মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন। প্রদীপের গায়ে বিভিন্ন নকশা আঁকা হচ্ছে। মাটির প্রদীপ তৈরি করে তার গায়ে বিভিন্ন রঙের নকশা এঁকে দিচ্ছেন শিল্পীরা। এক মৃৎশিল্পী বাসুদেব পাল বলেন, সাধারণ প্রদীপের চাহিদা নেই। তবে এখন কিছু কিছু নকশা প্রদীপের অর্ডার পাচ্ছি। তবে গত কয়েক বছর প্রদীপ তৈরি একদম ছিল না। এবার ওই নকশা প্রদীপ তৈরি অর্ডার অনুসারে করতে হচ্ছে। এবার আমি হাজার দুয়েক এই নকশা প্রদীপের অর্ডার পেয়েছি।