পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কিন্তু ওঁর স্ত্রী এবং ছেলেকে খুন করলে কেন? সে এই প্রশ্নের জবাবে পুলিসকে বলে, বুড়োদাকে মারার পর আর মাথার ঠিক ছিল না। কোপ মারার সময় ওঁর স্ত্রী বা ছেলে আমাকে দেখতে পায়নি। ওঁদেরকে না মেরে পালিয়ে যেতেই পারতাম। সেসময় ওঁরা অন্য ঘরে ছিলেন। কিন্তু তখন আমার মাথায় যেন রক্ত চেপে গিয়েছিল। মাথায় কোনও কিছু কাজ করছিল না। সেকারণে ওঁদের দু’জনকে মেরে ফেলি। সেসময় ঘরে অন্য কেউ থাকলে হয়তো তাকেও মেরেও দিতাম।
এখন কোনও আফশোস হচ্ছে না? তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, ফোনে গালিগালাজ শোনার পর ঠিক থাকতে পারিনি। খুব রাগ হয়েছিল। তবে খুন করে বাড়ি যাওয়ার পর ওঁর স্ত্রী এবং ছেলের কথা ভেবে খুব আফশোস হয়েছিল। একবার মনে হয়েছিল ইলেক্ট্রিক শক খেয়ে আত্মহত্যা করব। একবার ভেবেছিলাম থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করব। কিন্তু সেটাও পারিনি। খুন করার পর ইচ্ছা করলেই বাড়ি ছেলে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দিতে পারতাম। কিন্তু পরে ভেবেছিলাম ঘরেই থাকব। পালাব না, তাতে যা হওয়ার হবে।
কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনজনকে মারলে কীভাবে? জেরায় সে পুলিসকে বলে, দরজা খুলেই বুড়োদা আমাকে বাড়ির ভিতর ডেকে নেন। আমি ওঁর পিছনে হাঁটছিলাম। কয়েক পা হাঁটার পরেই ব্যাগ থেকে ধারালো অস্ত্র বের করে ওঁর ঘাড়ে জোরে কোপ মারি। একটা কোপেই তিনি বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। কোনও আওয়াজ করেননি। অন্য ঘরে তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে ছিল। স্ত্রী খাটের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। উনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছুটে গিয়ে তার ঘাড়েও জোরে কোপ মারি। উনিও বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ছেলেকেও কোপ মারি। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে ব্যাগ, জুতো এবং পলিসির কাগজ ছেড়ে চলে যাই। ওই কাগজ বুড়োদার ঘরেই ছিল।
জেলার পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ধৃত সবটাই স্বীকার করে নিয়েছে। কীভাবে সে খুন করেছে তার নিখুঁত বর্ণনাও দিয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর রাজমিস্ত্রির জোগান দেওয়ার কাজ শুরু করে। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় সে রাজমিস্ত্রির জোগান দেওয়ার কাজ করত। খুন করার পর সে স্বাভাবিকই ছিল। এমনকী প্রথম দিকে সে পুলিসকেও জেরায় বোকা বানিয়ে দেয়। কিন্তু ফেলে যাওয়া ব্যাগ, পলিসির কাগজ এবং জুতোই তাকে শ্রীঘরে পাঠাল।