বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে এলাকায় রায়চরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের মাঠে লক্ষ্মীপুজোর মেলা চলছিল। তার থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই সুমন মণ্ডল নামে ওই এলাকারই এক বাসিন্দারা বাড়িতে গুলি চলে। সেখানে সাতজন বিজেপি কর্মী-সমর্থক বসেছিল। সেখানে দিবাকর যান। তাঁর পরিবারের দাবি, মধ্যপাড়ার কয়েকজনের সঙ্গে ওঁর কিছু একটা গণ্ডগোল ছিল। ওরা সবাই বিজেপি করে। দিবাকর কম বয়সেই তৃণমূলের ভালো নেতা হয়ে উঠছিলেন। সে কারণে অনেকেই তাঁকে সহ্য করতে পারছিল না। মাঝে ওঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। দিবাকর বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে মেলায় যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। পরে শোনা যায় দিবাকরকে গুলি করা হয়েছে। দিবাকরের বাবা দিলীপ সরকার বলেন, ছেলে আমার থেকে ১০০ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিল। মেলায় যাব বলেই সে গিয়েছিল, পরে শুনলাম ওর গুলি লেগেছে। ও তৃণমূল করে। এলাকার তৃণমূল নেতা করুণাকৃষ্ণ মজুমদারেরও ঘনিষ্ঠ। সেখান থেকেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের রাগ। তাই ওকে গুলি করা হয়েছে। ঘটনায় ওর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত। যারা এই কাজ করেছে, তাদের আমরা চরম শাস্তি চাই। তৃণমূল নেতা করুণাকৃষ্ণবাবু বলেন, ওই যুবক তৃণমূল দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। বিজেপি কিছু সন্ত্রাসবাদীদের ব্যবহার করে এলাকা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। যে গুলি করেছে সে একজন দাগী অপরাধী। আমরা চাই, এ ধরনের কাজ যে করেছে তার শাস্তি হোক। একটা ছেলেকে গুলি চালানোর পর জনরোষেই আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির যদিও পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের নিজেদের মধ্যেই গণ্ডগোলের জেরে এসব হয়েছে। বিজেপির চার কর্মী সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। ভাঙচুর লুটপাঠও চালানো হয়েছে।
ঘটনায় যে বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বাড়ি পুরো আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। তাঁর পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমরা মেলায় ছিলাম। বাড়ি এসে দেখছি বাড়িতে তৃণমূলের লোকেরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আমি কোনওভাবে আমার বাচ্চাটাকে আর শাশুড়িকে বের করি। আমরা ঘটনার কারণ কিছুই জানি না। সুভাষ দাস নামে আর এক বিজেপি কর্মী বলেন, আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে সব লুটপাঠ করা হয়েছে। পরে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। কী হয়েছে, জেনে ওঠার আগে তৃণমূলের লোকজন রীতিমতো সন্ত্রাস চালিয়ে গিয়েছে। যদিও পুলিসের একটি সূত্রের খবর, অভিযুক্তের নামে এর আগেও কৃষ্ণনগর থানায় অভিযোগ রয়েছে। অস্ত্র আইনে তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, রাতের অন্ধকারে তৃণমূল যে বর্বরোচিত আচরণ করেছে তার প্রতিবাদে আমরা পথ অবরোধ করেছিলাম। পুলিস ঠিকমতো তদন্ত করছে না। বিজেপি বিধায়ক আশিসকুমার বিশ্বাস বলেন, মেলার কাছে গুলি চলেছে বলে শোনা গিয়েছিল। তারপরেই তৃণমূলের লোকেরা বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর করে। নিজেদের মধ্যেকার গণ্ডগোল বিজেপির উপরে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক বলেন, ওকে কেউ একজন মেরে ফেলবে বলেছিল। সেটা নিয়েই কথা বলতে ও ওখানে এসেছিল। কথাকাটাকাটির পরেই গুলি চালানো হয়।