কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, ১৯৬০ সালে বঙ্গোপসাগরের তীরে বাঁকিপুট এলাকায় সমুদ্রবাঁধ ভাঙন বড় আকার নেয়। সেই সময় শুধু বালি ও মাটির বাঁধ ছিল। ওই বছর অক্টোবর মাসে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকী, বাঁধ ভেঙে আশপাশের গ্রামগুলিতে জল ঢুকে পড়ার উপক্রম হয়। তখন এলাকার মানুষ তীব্র আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পাশাপাশি তৎকালীন সময়ের প্রশাসনের লোকজনও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ভাঙন আটকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন সকলেই। তখন বালির বস্তা, কাঠ, পাথর প্রভৃতি দিয়ে কোনওরকমে ভাঙন আটকানো হয়। পাশাপাশি এলাকার দেবেন্দ্রনাথ মাইতি, বসন্ত জানা প্রমুখ বিশিষ্টরা উদ্যোগী হয়ে গঙ্গাপুজোর মানত করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, পুজো শুরু হওয়ার পর থেকে বাঁকিপুটে সমুদ্রবাঁধ ভাঙন আর হয়নি বলে গ্রামবাসীদের দাবি। পরে অবশ্য বোল্ডার ও পাথর দিয়ে বাঁধ শক্তপোক্তভাবে বাঁধানোর কাজ হয়। প্রথম কয়েক বছর বাঁশ ও খড়ের ছাউনিতেই পুজো হয়েছিল। বিগত কয়েক দশক ধরে মণ্ডপ তৈরি করে পুজো করা হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের দৃঢ় বিশ্বাস, মা গঙ্গাই সমুদ্রবাঁধ ভাঙনের আতঙ্ক থেকে এলাকার মানুষজনকে রক্ষা করেছেন এবং আগামী দিনেও রক্ষা করবেন। তাই অন্য কোনও দেবী নয়, গঙ্গাকেই ‘আরাধ্যা দেবী’ বলে মানেন বাঁকিপুট এলাকার মানুষজন। তবে, বর্তমানে বাঁকিপুট থেকে বেশ কিছুটা দূরে সমুদ্রবাঁধ ভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের প্রবল বিশ্বাস এবং কামনা যে, মা গঙ্গাই ভাঙনের আতঙ্ক দূর করবেন। শুধু বাঁকিপুট নয়, আশপাশের টিয়াকোলা, হাজরাকোলা, ভূপতিচক, ভোগপুর, গোপালপুর, গোপালচক সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পুজোয় শামিল হন। আগামী দিনে গ্রামবাসীরা এখানে মা গঙ্গার স্থায়ী মন্দির গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উৎসব কমিটির সম্পাদক তাপস করণ ও সভাপতি বলাইলাল জানা বলেন, মূলত মাঘ-ফাল্গুন মাসেই গঙ্গোৎসব হয়। কিন্তু এটি হল অকাল গঙ্গোৎসব। সমুদ্রবাঁধ ভাঙন রোধে মানত পূরণ করার লক্ষ্যেই এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। পুজো উপলক্ষে চারদিন ধরে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বসেছে প্রচুর দোকানপাট। আলোকমালায় সাজানো হয়েছে উৎসব প্রাঙ্গণ।