বিদ্যার্থীদের শুভদিন। উচ্চ/ উচ্চতর বিদ্যালাভে উন্নতি। ব্যবসায়িক কর্মে বাধা। বন্ধুর শত্রুতায় মনঃকষ্ট। ... বিশদ
লক্ষ্মীপুজোর বাজারে ফুল, ফল সহ সব সামগ্রীর দাম আকাশছোঁয়া হলেও গৃহস্থের বাড়িতে ধনদেবীর আরাধনায় খামতি কিছু ছিল না। তাই বাসিন্দারা লক্ষ্মীপুজোর আগে থেকেই বাজার সেরে ফেলেন। ছাঁচের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে মাটির লক্ষ্মী প্রতিমাও ভক্তিভরে পূজিত হয়েছে। সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর প্রভৃতি শহরে বহু বাড়িতে এদিন লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করা হয়।
সাঁইথিয়ার দেরিয়াপুর পঞ্চায়েতের রানিপুর গ্রামে যুব সংঘের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুজোয় থিম করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, তুলো, কাপড় প্রভৃতি সামগ্রী পরীর দেশে থিম তৈরি করা হয়েছে। গ্রামে কোনও দুর্গাপুজো হয় না। তাই সেখানে লক্ষ্মীপুজোর আরাধনা সাড়ম্বরে করা হয়। পুজো কমিটির পক্ষে রূপম দাস বলেন, আমাদের লক্ষ্মীপুজোয় তিনদিন ধরে নানা অনুষ্ঠানে চলে। লক্ষ্মীদেবীর পুজোয় বহু ভক্তকে প্রসাদ বিলি করা হয়।
সিউড়ির ৬নম্বর ওয়ার্ডের ভট্টাচার্যপাড়ায় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজো ১০১তম বর্ষে পড়েছে। পুজো তিনদিন ধরে চলে। হোম, যজ্ঞ করা হয়। ওই বাড়ির অশোককুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতিমা বিসর্জনের পর প্রত্যেক বছর ঢাকের বাদ্যির সঙ্গে বাড়ির প্রত্যেকেই নৃত্য করেন। এমনকী, কয়েন দিয়ে হরির লুট করা হয়। মহম্মদবাজারের খড়িয়া গ্রামেও এদিন প্রাচীন রীতি মেনে ধনদেবীর আরাধনা করা হয়েছে। দুবরাজপুরের হেতমপুরে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির শতাব্দী প্রাচীন লক্ষ্মীপুজো ঘিরেও উন্মাদনা দেখা গিয়েছে। প্রাচীন পুজোগুলির বেশিরভাগই তিনদিন ধরে চলে। এলাকার বাসিন্দাদের খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়। এছাড়া অবিনাশপুর, পুরন্দরপুরেও সাড়ম্বরে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়। এমনকী, রাজনগর, খয়রাশোল প্রভৃতি এলাকাতেও সমাদরে বাসিন্দারা লক্ষ্মীপুজোয় মাতেন।
অন্যদিকে, মল্লারপুরের ঘোষগ্রামে বহু প্রাচীন নিমকাঠের দারুমূর্তিতে লক্ষ্মীপুজো হয়। এখানে বীরভূমের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের উপলাই গ্রামের বাসিন্দারাও ভিড় জমান। এদিন রাতে ভক্তদের খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়। এই পুজোর যজ্ঞে বেলপাতার ব্যবহার হয় না। এখানে ১০৮টি ক্ষীরের নাড়ু আহুতি দেওয়া হয়। মন্দিরের সেবাইত গুরুসরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটেছে। লক্ষ্মীপুজো ঘিরে দুই জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে, মুরারইয়ের গোঁড়শা গ্রামে বহু প্রাচীন লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। এখানে ধনদেবীর পাশাপাশি ছায়া ও ছবির মূর্তিও থাকে। কথিত রয়েছে, ছায়া ও ছবির প্রকৃত রূপ জয়া এবং বিজয়া। এই এলাকার লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকেও বহু ভক্ত ভিড় জমান। এছাড়া নলহাটি, রামপুরহাট প্রভৃতি শহরে বাসিন্দারা লক্ষ্মীপুজোয় মেতে ওঠেন।
এদিন কীর্ণাহারে বাজারের লক্ষ্মীতলায় আড়ম্বরে ধনদেবীর পুজো হয়। প্রায় ২৫০বছরের পুরনো পুজো ঘিরে বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে। এছাড়া বোলপুর, লাভপুর, ইলামবাজার প্রভৃতি এলাকাতেও ধুমধাম করে লক্ষ্মীপুজো হয়েছে।