বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আবাসনের মানসিক প্রতিবন্ধী পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে শারদোৎসবের ছোঁয়া লেগেছে। কেউ আপন মনে গেয়ে চলেছে আগমনি গানের কলি। কেউ কুড়িয়ে পাওয়া ইটের টুকরো দিয়ে আবাসনের প্রাচীরে আঁকছে মায়ের মুখ। আবাসনের এক কর্মী বলেন, পুজোয় ওদের বাবা-মা ও প্রিয়জনরা আসেন। এক সঙ্গে আনন্দ করেন। তাই ওদের কাছে মাটির মায়ের থেকে আসল মা ও পরিবারের টান অনেকটাই বেশি।
কালনা-২ ব্লকের সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের বিক্রমনগর এলাকায় রয়েছে একটি মানসিক প্রতিবন্ধী আবাসিক হোম। সেখানে ৪০ জন পুরুষ ও মহিলা মানসিক প্রতিবন্ধী রয়েছেন। আবাসনের সম্পাদক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুজো সম্পূর্ণ ওদের নিজস্ব। আবাসিকদের মধ্যে যারা অনেকটাই সুস্থ, তারাই পুজোর আয়োজন করেন। ঢাক বাজানো, আরতি করা সবেতেই ওদের অংশগ্রহণ থাকে। আমরা সপ্তমীর দিন সকল আবাসিকের অভিভাবকদের আমন্ত্রণ করি। ওইদিন অনাবিল আনন্দ লক্ষ্য করা যায়। মায়ের কাছে প্রার্থনা, ওরা যেন দ্রুত সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পারেন।
অন্যদিকে, অতীত স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে শারদোৎসবের আনন্দ পেতে উৎসবে মেতেছেন কালনা-২ ব্লকের তালা গ্রামের বৃদ্ধাশ্রমের ১৪ জন বৃদ্ধ বৃদ্ধা। এবার বৃদ্ধাশ্রমের দুর্গা পুজো দ্বিতীয় বর্ষ। পরিজনদের কাছ থেকে দূরে থাকা আবাসিকদের মধ্যে পুজোর আনন্দ যেন অতীত ভুলে বর্তমানকে আঁকড়ে ধরা। কেউ মাকে পরানোর জন্য সাধ্যমতো কাগজের মালা তৈরি করেছেন। কেউ দেবীকে পরানোর জন্য নিজের জমানো টাকায় কিনে এনেছেন সিঁদুর, আলতা।
কালনা-২ ব্লকের তালা গ্রামে বেহুলা নদীর পারে সুন্দর পরিবেশে আব্দুস সাত্তার সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বৃদ্ধাশ্রম ‘বেলা শেষে’। প্রিয়জনদের থেকে বিচ্ছিন্ন এমন ১৪ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার আশ্রয়স্থল। উৎসব এলে প্রিয়জনদের কথা মনে করে দু’ফোঁটা চোখের জল ফেলে দূরে ঠেলে দেওয়া সন্তান পরিজনদের জন্য মায়ের কাছে সুখ শান্তি কামনা করেন এমনই জানালেন আশ্রমের আবাসিক সত্তরোর্ধ্ব রাসমণিদেবী, শ্যামলীদেবী, কানাইবাবুরা। এই কেন্দ্রের সম্পাদক প্রণব রায় বলেন, সামর্থ্য তেমন না থাকলেও সকলের সহযোগিতায় পুজোর উদ্যোগ শুরু করেছি। আমরা চাই, সকলের মধ্যে মা যেন সুস্থ শরীর ও শান্তি ফিরিয়ে দেন।