বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
শহরের দু’টি বিগ বাজেটের পুজো করে ইউথ গিল্ড ও নান্দনিক ক্লাব। কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজ সংলগ্ন নান্দনিক ক্লাবের পুজোর বাজেট এবার ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। ৪০তম বর্ষে তাদের থিম, ‘বাঙালিনী’। মণ্ডপে বাংলার নানা সংস্কৃতিকে ঢোকরা শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। বাঁশ, কাপড়ের উপর নানা সামগ্রী দিয়ে সুদৃশ্য এবং নজরকাড়া মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। মণ্ডপ তৈরি করেছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইলা। ক্লাবের কর্মকর্তা সুমিত ভদ্র বলেন, কুমারী পুজো অন্যতম আকর্ষণ। দশমীর দিন বিশেষ আকর্ষণ রাবণ পোড়া। রয়েছে চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা।
শহরের কুমারপুর ইউথ গিল্ড ক্লাবের ৩১তম বর্ষের পুজোর এবার থিম, কৃষ্ণপ্রেম ও ভাবনা। ক্লাব সম্পাদক আশিসকুমার জানা বলেন, এবার পুজোর বাজেট ৬০ লক্ষ টাকা। বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে চারদিকে ক্রোধ, খুনোখুনি, জাতপাত, হিংসার ছড়াছড়ি। মানুষের মধ্য থেকে ভালোবাসা, প্রেম, প্রীতি এসব যেন উধাও হয়ে গিয়েছে। আমরা সকলে জানি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ প্রেমের প্রতীক। মানুষরূপে মর্ত্যে এসেছিলেন তিনি। প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা বিরাজমান। সে যত বড়ই শয়তান হোক না কেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিভিন্ন মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রূপে বিরাজ করছেন। তাই কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা হয়ে মানুষ যাতে মানুষকে ভালোবাসে, সবাই মিলেমিশে থাকতে পারে, একে অন্যের দুঃখে যেন ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে-সেই বার্তাই আমরা সমাজের প্রতি দিতে চাই। মণ্ডপের মধ্যে ‘বৃন্দাবন ধাম’ গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে রাজস্থানের বিভিন্ন শিল্পকলা, পোশাক, রাজস্থানী গানবাজনা তুলে ধরা হচ্ছে। আবার বৃন্দাবন ধামে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বৃত্তান্ত, কৃষ্ণের ননী চুরি, রাধাকৃষ্ণের প্রেম, শেষে অসুররূপী কংসকে বধ-সবকিছুই অত্যাধুনিক লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। রাজস্থানী ধাঁচে আমরা মায়ের রূপকে তুলে ধরতে চলেছি। বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে, বেনারস থেকে আসা লক্ষ্মীকান্ত পণ্ডিত ও তাঁর নেতৃত্বে ১২ জন পণ্ডিত পুজোর চারদিন ভজন সহযোগে মণ্ডপে আরতি করবেন।
শহরের চৌরঙ্গি মোড় সংলগ্ন চৌরঙ্গি ক্লাবের এবার থিম ‘স্বপ্ন উড়ান’। ক্লাবের কর্মকর্তা কাবুল বেরা বলেন, পুজো এবার ১৩ তম বর্ষে পা দিল। তাঁর কথায়, ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা ভোরের দিকে নানা স্বপ্ন দেখে। যেমন-পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে। নীল আকাশে মেঘের ভেলা। সবুজ গাছগাছালিতে ভরে উঠেছে পথ-প্রান্তর। সেই স্বপ্নকে আমরা মণ্ডপের মাধ্যমে বাস্তব রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মশারির নেট, কাগজ, স্পঞ্জ ও বিভিন্ন ডিজাইন তুলে ধরে স্বপ্নের নানা রূপকে মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। মণ্ডপের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাবেকি প্রতিমা।
শহরের সেচ দপ্তর সংলগ্ন স্থানে চৌরঙ্গি রিক্রিয়েশন ক্লাবের পুজোয় থিম ‘বরফের দেশের পরী’। ক্লাব সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, ২২তম বর্ষের পুজোয় বাঁশ, কাপড়ের উপর প্লাইউড, ফোম, স্পঞ্জ দিয়ে বরফের দেশকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। মণ্ডপের সামনে পক্ষীরাজ ঘোড়া থাকবে। তার উপর চড়েই মর্ত্যে আসবেন পরী। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই প্রতিমা।
কাঁথির জুনপুট মোড়ে ওয়েলফেয়ার ক্লাবের পুজো এবার ২০তম বর্ষে পদার্পণ করল। সম্পাদক শোভন মাইতি বলেন, এবার আমাদের থিমের নাম ‘নারী’। অর্থাৎ নারী কখনও মা দুর্গা, নারী কখনও সাধারণ নারী, আবার নারী কখনও নির্যাতিতা। আবার কখনও নারী সমাজের মুখ হয়ে ওঠেন। বাঁশ, কাপড়ের উপর থার্মোকল, তুষ সহ নানা সামগ্রী দিয়ে নারীর বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। মণ্ডপের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই প্রতিমা। এছাড়াও শহরের সরস্বতী ক্লাব, বন্দেমাতরম ক্লাব, করুণাময়ী ক্লাব, সুপারস্টার ক্লাব, আটিলাগড়ি আদি সর্বজনীন, মাতৃ সঙ্ঘ, থানাপুকুরপাড় সর্বজনীন, প্যারাডাইস, প্রিন্স স্টার, শারদী থেকে শুরু করে প্রতিটি পুজোমণ্ডপেই বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।