সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
প্রখর রোদ, তীব্র গরম। এই অবস্থায় কয়েকদিন ধরে দুবরাজপুর পুরসভার ৭, ১০ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। দূরবর্তী স্থান থেকে তাঁদের পানীয় জল নিয়ে আসতে হচ্ছে। দিন পাঁচেক ধরে এই সমস্যা চললেও উদাসীন পুরসভা বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে এদিন সকাল থেকে ৭ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে কামারশাল মোড়ে কেউ প্লাকার্ড হাতে, কেউবা কলসি কাঁধে নিয়ে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন এলাকার মানুষ। অবরোধে পুরুষ ও মহিলার পাশাপাশি বাচ্চারাও শামিল হয়েছিল। তাঁদের সকলের মুখে স্লোগান ছিল, ‘জল দাও, রাস্তা নাও’।
বিক্ষোভকারী সালেহা বিবি, রবিনা বিবি, নাজিরা বিবি বলেন, পাঁচদিন ধরে পুরসভার পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল মিলছে না। ফলে, যাঁদের টাকা আছে, তাঁরা জল কিনে খাচ্ছেন। আর আমাদের মতো মানুষদের দূরবর্তী এলাকা থেকে জল আনতে হচ্ছে। এলাকায় সেভাবে পুকুরও নেই। ফলে, পুরসভার জলের উপরই আমাদের নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। গৃহস্থালির কাজ থেকে জামাকাপড় কাচা সবই করতে হয়। তাঁরা আরও বলেন, লাগোয়া ওয়ার্ডে যাওয়া হলে ওখানকার বাসিন্দারা জল দিতে নারাজ। কারণ, সেখানকার বাসিন্দারাও পর্যাপ্ত জল পান না। পানীয় জলের সমস্যার কথা পুরসভার নজরে আনা হলেও কোনও হেলদোল নেই। তাই এদিন আমরা জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছি।
এদিকে কামারশাল মোড় দিয়ে একদিকে জাতীয় সড়ক, অন্যদিকে দুবরাজপুর বক্রেশ্বর রাস্তা। গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে অবরোধ করায় দু’টি রাস্তাই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রচুর যাত্রী বোঝাই বাস ও অন্যান্য যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। তীব্র গরমে নাভিশ্বাস ওঠে আটকে পড়া মানুষজনদের। এক বাসযাত্রী বলেন, পানীয় জলের জন্য বাসিন্দারা কষ্টে রয়েছেন ঠিকই, তা বলে এত মানুষকে ভোগান্তির মুখে ফেলা ঠিক হয়নি। তাঁরা তাঁদের দাবি নিয়ে পুরসভায় যেতে পারতেন।
এদিন প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে বিক্ষোভ চলার পর দুবরাজপুর থানার ওসি মহম্মদ আলির নেতৃত্বে পুলিসবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। ওসি পুরসভার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
উল্লেখ্য, প্রায় একবছর হতে চলল এই পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়েছে। বর্তমানে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সিউড়ি মহকুমা শাসক রাজীব মণ্ডল। বিদায়ী চেয়ারম্যান পীযুষ পাণ্ডে বলেন, বর্তমানে একটি রিজার্ভার থেকে পুরসভা এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। আরও বেশি করে পানীয় জল সরবরাহ করতে অন্য একটি রিজার্ভার করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, দু’টি রিজার্ভারকে আটটি করে ওয়ার্ড ভাগ করে জল সরবরাহ করা হবে। তার জন্য কিছু জায়গায় পাইপ লাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেজন্য তিনদিন ওই ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হবে বলে মাইকেও ঘোষণা করা হয়েছিল। বিশ্বকর্মা পুজো থাকায় মাঝে কাজ বন্ধ ছিল। রবিবারের মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এখন রাজনীতি করতে কেউ সাধারণ মানুষকে উস্কে দিয়ে এই আন্দোলন করিয়েছে। অন্যদিকে, মহকুমা শাসককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।