শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অরিজিতের বাবা বিবেকানন্দ গঙ্গোপাধ্যায় পুলিসের এসআই পদে কর্মরত। তাঁর বাড়ি শহরের কপুরবাগান এলাকায়। বৃহস্পতিবার তাঁর ছেলে একাধিকবার বোঙাবাড়ি এলাকায় যান। সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে বোঙাবাড়ি যাওয়ার পর আর ফেরা হয়নি অরিজিতের। মৃতের স্ত্রী সীমা গঙ্গোপাধ্যায় পুরুলিয়া মফসস্ল থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, প্রায় ৭টা নাগাদ তিনি জানতে পারেন, অরিজিৎকে বোঙাবাড়ি গ্রামের কয়েকজন হেনস্তা করেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, অরিজিৎ গুরুতর জখম অবস্থায় শিবমন্দিরের সামনে পড়ে রয়েছেন। পুলিসের সাহায্যে তাঁকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। সীমাদেবী বোঙাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা খেদন মাহাত সহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে পরিকল্পনা মাফিক খুন করার অভিযোগ করেন।
খুনের ঘটনার কথা চাউর হতেই কপুরবাগান এলাকার বাসিন্দারা রাতেই পুরুলিয়া-বরাকর রাস্তা অবরোধ করেন। অবরোধে শামিল সুধা বাউরি বলেন, কপুরবাগানের ছেলেকে বোঙাবাড়ির লোকজন খুন করেছে। ওই যুবকের ব্যবহারও ভালো ছিল। ও যদি কোনও ভুলও করে থাকে তাহলে পুলিসকে জানাতে পারত। খুনের প্রতিবাদেই রাস্তা অবরোধ করা হয়।
অন্যদিকে, শুক্রবার সকালে বোঙাবাড়ি এলাকার বাসিন্দারাও পুরুলিয়া-বরাকর রাস্তা দফায় দফায় অবরোধ শুরু হয়। পুলিসের সঙ্গেও বচসা হয় অবরোধকারীদের। অবরোধে উপস্থিত বোঙাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রেবতী মাহাত বলেন, ওরা আমার ঘর ঢুকে অত্যাচার চালিয়েছে। ভাঙচুর করেছে। সোনা চুরি করেছে। মেয়েদের শ্লীলতাহানি করেছে। ওই তিনটে ছেলের নাম জানি না। তবে ওরা প্রায় আসত। মাঝে মধ্যে দরজায় ধাক্কা মারত। গ্রামের অন্য মহিলাদেরও হুমকি দেয়।
অবরোধে শামিল বোঙাবাড়ি গ্রামের মহিলা অষ্টমী মাহাত, চায়না গড়াই বলেন, ওই তিনজন ছেলে প্রায়ই গ্রামে এসে অত্যাচার করত। মহিলাদের উত্ত্যক্ত করত। অষ্টমীদেবী আরও বলেন, গোটা গ্রামের লোকজন ওই ছেলেটাকে মারধর করল। অথচ আমার স্বামীকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। স্বামীর মুক্তির দাবি করছি।
যদিও অরিজিতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন মৃতের আত্মীয় রাহুল রায়। তিনি বলেন, অরিজিতের সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়নি। তার এক বন্ধুর সঙ্গে ঝামেলা হয়। অরিজিৎ সমঝোতা করতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তিনবার সে বোঙাবাড়ি গিয়েছিল। সন্ধ্যায় ওকে পরিকল্পনা করে গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয়েছে। অরিজিৎ যদি মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো তাহলে কী ওর হয়ে কেউ বেরতো? তবে ওর এক বন্ধু ভালো ছিল না।
আর এক আত্মীয় অমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গোটা ঘটনাটি রহস্যজনক। পুরুলিয়ায় এরকম ঘটনা ছিল না। একবন্ধু ওকে ওই গ্রামে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। পরে রাতে দুর্ঘটনার খবর পেলাম।
এবিষয়ে পুরুলিয়ার পুলিস সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ওর শরীরের আঘাত দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচদিনের পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে এবিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।