পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়েব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিটিকে বুধবার সকাল থেকে ঘুরতে দেখা যায়। প্রথমে বিষয়টি নজরে আসে এলাকার মহিলাদের। তারা তাকে পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে অসংলগ্ন কথা বলায় সন্দেহ বেড়ে যায়। এরপরেই মুহূর্তে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে ছেলে ধরার গুজব ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। যদিও বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওয়েব্রিজ সংলগ্ন ধাওড়া গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া ভুইয়া পাড়া এলাকায় মঙ্গলবার রাত থেকেই চারজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। রাতে আতঙ্কেই কাটায় বাসিন্দারা। সকালে ফের তাদের দেখা গেলে এলাকাবাসী ধাওয়া করায় বাকি তিনজন পালালেও একজন ধরা পড়ে যায়। এরপর নাম ও বাড়ি জিজ্ঞাসা করলেও সে ঠিক উত্তর দেয়নি। এমনকী তার কাছে কিছু সন্দেহজনক পাউডার পাওয়া যায় বলে একাংশের দাবি। এরপরেই শুরু হয় গণপ্রহার। পথবাতির খুঁটিতে বেঁধে মারা হতে থাকে। দেন্দুয়া, শিবদাসপুর ধাওড়া সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫০০ লোক জড়ো হয়ে যায়। নৃশংসভাবে চলতে থাকা গণপ্রহা। খবর পেয়ে কিছু সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে পুলিস এসে তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে। তাকে গাড়িতে তোলাও হয়। কিন্তু উত্তেজিত জনতা গাড়ি থেকে নামিয়ে ফের ব্যাপক মারধর করে। পরে পুলিস কোনও রকমে তাকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে ঘটনার পরই পুলিস সক্রিয় হয়ে ওঠে। এলাকায় টহল দিতে থাকে বিশাল পুলিস বাহিনী। পরিস্থিতি থমথমে। এদিন বিকালে ওই এলাকার অদূরে লাকলাদড়িয়া এলাকাতেও আবার ছেলে ধরার গুজব ছড়ায়।
পুলিস কমিশনার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিং বলেন, গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এবারই প্রথম নয়, সাম্প্রতিককালে ধারাবাহিকভাবে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার নানা প্রান্তে। জামুড়িয়া, কুলটি, রানিগঞ্জে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগে হীরাপুর থানা এলাকায় চোর সন্দেহে এক যুবককে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিসের গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। রাজ্য সরকার গণপিটুনির বিরুদ্ধে কড়া আইন পাশ করেছে। পুলিসও বিভিন্ন থানা এলাকায় এনিয়ে লাগাতার সচেতনতা মূলক প্রচার করছে। তা সত্ত্বেও এই ঘটনায় কেন লাগাম টানা যাচ্ছে না তা নিয়ে ধন্দে সবপক্ষই।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের মনরোগ বিশেষজ্ঞ দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী বলেন, সমাজের মধ্যে একটা অস্থিরতা, নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সময়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়েই এই সব ঘটনা ঘটিয়ে ফেলছে। এর পাশাপাশি বেকারত্ব, নেশাগ্রস্ত যুবকদের সংখ্যা বাড়াও এই ঘটনা বৃদ্ধির পিছনে অনুঘটকের কাজ করছে।