ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
গতবছর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাহুবলীর রাজপ্রাসাদের আদলে মণ্ডপ গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল এই পুজোকমিটি। জেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু মানুষ ওই মণ্ডপ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন। সেই ভিড় সামাল দিতে পুলিসের কালঘাম ছোটে। গতবারের চেয়েও এবার কয়েকগুণ বেশি দর্শক টানতে মায়াপুরের বিখ্যাত ইসকন মন্দিরকে মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা।
রামপুরহাট পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বপন রায়, শম্ভু সিং, বলীরাম ঠাকুর, সমীরণ ঘোষদের মতো এলাকার কয়েকজন ফুটবলার উদ্যোগ নিয়ে এই পুজো শুরু করেছিলেন। এবার সেই পুজো ৫১ বছরে পা দিল। তবে দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এই পুজোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার আব্বাস হোসেন। ফলে এই পুজো সম্প্রীতির পুজো নামেও খ্যাত। যতদিন যাচ্ছে এই পুজোর জাঁকজমকতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে এলাকার মানুষের মত। এদিন থেকে মেদিনীপুরের প্রায় ৩৫ জন শিল্পী মণ্ডপ গড়ার কাজ শুরু করেছেন। মণ্ডপের ভিতরে ১৪ ফুট উচ্চতার কালী প্রতিমা থাকবে। কুমোরটুলির শিল্পীরা সেই প্রতিমায় মাটির কাজ দিয়ে ফুটিয়ে তুলবেন। শহরজুড়ে থাকবে চন্দননগরের আলোকসজ্জা। উদ্যোক্তাদের দাবি, যাঁরা মায়াপুরের ইসকন মন্দির দেখেছেন, তাঁরাও যেমন মণ্ডপে ভিড় জমাবেন। তেমনই যাঁরা দেখেননি তাঁরাও আসবেন।
আব্বাস হোসেন বলেন, মায়াপুরের ইসকন চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান। ইসকনের সেই স্থাপত্য কলা ও টেরাকোটার কাজ আমরা তুলে ধরব। পুজোর সময় কীর্তন হবে। মণ্ডপে প্রবেশ করলেই যাতে ইসকন মন্দিরের পরিবেশ অনুভূত হয় তার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিন খুঁটিপুজোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুকান্ত সরকার, তৃণমূলের রামপুরহাট শহর সভাপতি অমিত চক্রবর্তী এবং বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। তবে গত বছর পর্যন্ত এই পুজো কমিটির যুগ্ম সভাপতি পুরসভার চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি থাকলেও এদিন তাঁর অনুপস্থিতি ঘিরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও উদ্যোক্তা আব্বাস সাহেব বলেন, ওঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কেন আসেননি বলতে পারব না। এখনও আমাদের কমিটি গঠনের চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। যদিও অনেকেই এর মধ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গন্ধ পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত ২১ জুন পুরসভার সামনেই কাউন্সিলার আব্বাস হোসেন ও তাঁর পুরকর্মী দাদার হাতে হেনস্তার শিকার হন চেয়ারম্যান। সেই ভিডিও ভাইরালও হয়ে যায়। দলীয় নেতৃত্ব দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মিটমাট করে দিলেও দ্বন্দ্ব যে পুরোপুরি মেটেনি তা এদিন চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিই জানান দিচ্ছে বলে এলাকাবাসীর মত।
যদিও এব্যাপারে চেয়ারম্যান বলেন, আমাকে খুঁটি পুজোতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, স্কুলের খেলার মাঠ দখল করে পুজো, মেলা কিছুই করা যাবে না। সেই নির্দেশ পুরসভাতেও এসেছে। তাই বেআইনি কাজে আমি যাইনি। কিন্তু সেক্ষেত্রে পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? তিনি বলেন, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এটা তো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ।
এব্যাপারে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, খেলার মাঠে পুজো হচ্ছে এই বিষয়টি আমার জানা নেই। এসডিওর কাছ থেকে তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।