ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। দফায় দফায় বৃষ্টি। রবিবার ছুটির দিনে এমন আবহাওয়ায় দুপুরের পাতে ইলিশের স্বাদ পেতে রামপুরহাটের হাটতলা বাজারে ছিল ভিড়। বাজারে ইলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছেন তাঁরা। অবশেষে দু’-তিনজন মাছ ব্যবসায়ীর কাছে ইলিশের দেখা মিললেও, তা হিমঘরে মজুত থাকা। বাক্সে বরফের উপর রাখা গোটাকতক ইলিশ। তার স্বাদ ও গন্ধ নেই বললেই চলে। চকচকে আঁশের টানে দু’-একজন ক্রেতা এগিয়ে এলেও দাম শুনেই ছিটকে যাচ্ছেন। ৪০০গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজিপ্রতি দর ৫০০-৬০০ টাকা। ৭০০ বা ৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ কেজিপ্রতি ১০০০টাকা। আর এক কেজি বা তার থেকে সামান্য একটু বেশি ইলিশের দর ১৫০০টাকা। এক ক্রেতা অবিনাশ রায় বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি। এমন আবহাওয়া এবছর রামপুরহাটে প্রথম। খিচুড়ি ও ইলিশ মাছ ভাজা খাওয়ার ইচ্ছা উপেক্ষা করতে পারলাম না। কিন্তু, বাজারে এখন ইলিশের এত দাম হবে বুঝতে পারিনি। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে এখন ইলিশ। দর শুনে একজন ক্রেতা ব্যঙ্গ করে বললেন, ইলিশের দর শুনে মনে হচ্ছে পদ্মা থেকে ধরে সরাসরি নিয়ে আসা হয়েছে বাজারে। হিমঘরের পুরনো ইলিশের না আছে স্বাদ, না আছে গন্ধ। তাও কেন এত দর কিছুই বুঝছি না বাপু? আর এক ক্রেতা বলেন, ইলিশের জোগান এবছর তুলনামূলকভাবে কম। বাজারে যে ইলিশ বিকোচ্ছে, তার বেশিরভাগ হিমঘর থেকে আমদানি। কিন্তু, তার দরও আকাশছোঁয়া। বাড়িতে অতিথি আসবে বলেই ইলিশ কিনতে আসা। তবে, বাজারে এসে দর শুনে হতাশই হলাম।
এক মাছ ব্যবসায়ীর দাবি, অন্য বছর এই সময় নানা সাইজের ইলিশে বাজার ভরে যায়। কিন্তু, এবছরের ছবিটা কার্যত উল্টো। তাঁরা বলেন, জুলাই থেকে নভেম্বরের শেষ অবধি ইলিশের মরশুম চলে। এবছরের শুরু থেকেই মাছের আমদানিতে টান। হিমঘরে কিছু মাছ থাকলেও সেগুলির দাম চড়া, দাবি তাঁদের। বড় মাছ ব্যবসায়ী বাক্কার শেখ বলেন, বর্ষার শুরুর দিকে জোগান কিছুটা থাকলেও এখন নেই বললেই চলে। ছোট-বড় সব মাপের ইলিশের জোগানে টান। যেটুকু জোগান আছে তার দামও বেশি। ফলে, বাধ্য হয়ে চড়া দামেই ইলিশ বিক্রি করতে হচ্ছে।
যদিও এব্যাপারে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, যে আবহাওয়া চলছে তাতে ইলিশ পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। এত নিম্নচাপ হচ্ছে তাতে ইলিশ আসছে না। আবহাওয়া পরিবর্তন না হলে ইলিশের জোগান দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। তবে, পুজোর আগে আবহাওয়া পরিবর্তন হবে। তখন ইলিশের জোগান বাড়বে। স্বভাবতই দামও কম হবে। সব মিলিয়ে মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে ইলিশ এখন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ইলিশের জোগান বাড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।