কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, এদিন ভোরে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া মুরারই থানার পলশা গ্রামের কাছে ওসি তরুণ চট্টরাজের নেতৃত্বে নাকা চেকিং চালাচ্ছিল পুলিস। পলশা মোড়ের কিছুটা আগে রাস্তার ধারে অনেকক্ষণ ধরে একটি ট্রাক্টরের দাঁড়িয়ে থাকা ঘিরে পুলিসের সন্দেহ হয়। ট্রাক্টরের ডালার উপরে একটি প্লাস্টিক রাখা ছিল। এক অফিসার বলেন, প্রথমে মনে হচ্ছিল, খালি ট্রাক্টর। তল্লাশি চালাতে গিয়ে প্লাস্টিক সরাতেই চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যায়, প্লাস্টিকের তলায় জিলেটিন স্টিকের ২৫টি প্যাকেট। প্রতিটি প্যাকেটে ১০টি করে মোট ২৫০০পিস জিলেটিন স্টিক রয়েছে। পুলিসের অনুমান, চেকিং দেখেই রাস্তায় ট্রাক্টর দাঁড় করিয়ে চম্পট দেয় চালক। ঝাড়খণ্ড থেকে বীরভূমের কোথাও সেগুলি পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু, ট্রাক্টরে করে বিস্ফোরক পাচার সচরাচর দেখা যায় না। পুলিসের চোখে ধুলো দিতেই পদ্ধতি পাল্টে এভাবে বিস্ফোরকগুলি বহন করা হচ্ছিল। ট্রাক্টরের নম্বর পরীক্ষা করে পাচার চক্রের পাণ্ডাকে ধরার পাশাপাশি নাশকতার ছক ছিল কি না তা তদন্ত করে দেখছে পুলিস।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১০জুলাই রামপুরহাটের বড়জোল ও রদিপুর গ্রামের মাঝে ১১৯কুইন্টাল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও প্রায় একলক্ষ অবৈধ ডিটনেটর উদ্ধার হয়। গত ৬আগস্ট মহম্মদবাজার থানার পুলিস চারবস্তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ৯৫০টি করে ডিটনেটর ও জিলেটিন স্টিক উদ্ধার করে। স্বাধীনতা দিবসের আগে ঘনঘন বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় জেলাবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, রামপুরহাট, মহম্মদবাজারের পাঁচামি, নলহাটি, মুরারইয়ের রাজগ্রাম বীরভূম জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলজুড়ে গজিয়ে উঠেছে কলা-টুপি-জোড়ার কারবার। অবৈধ বিস্ফোরক কারবারকে এই নামেই চেনেন এলাকার বাসিন্দারা। কলা অর্থাৎ জিলেটিন স্টিক, টুপি অর্থাৎ ডিটনেটর এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটকে জোড়া নামেই চেনেন সকলে। পাথর খাদান এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটাতে গেলে এই তিনটি উপাদান আব্যশিক। ২০১৭সাল থেকেই জেলায় ২১৭টি খাদানের মধ্যে ২১১টি বন্ধের নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, অধিকাংশই চালু রয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে ওই অবৈধ খাদানে কোনও বৈধ বিস্ফোরক ব্যবসায়ী তা সরবরাহ না করার জেরে গজিয়ে উঠেছে বিস্ফোরকের আন্তঃরাজ্য পাচার চক্র। যেখানে বৈধ কারবারের জন্য বিশেষ বিস্ফোরণ নিরোধক গাড়ি করে তা সরবরাহ করা হতো। কিন্তু, এখন সেসবের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে বিস্ফোরক পাচার চলছে। যার জেরে জেলাজুড়ে রমরমা হয়ে উঠেছে অবৈধ বিস্ফোরক কারবার। পুলিস অবশ্য মাঝে মধ্যেই বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মূল কারবারিরা অধরাই থেকে যায়।