কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে, একাধিক প্রকল্প গরিব মানুষের হাতে সরাসরি তুলে দিতে পারলে একদিকে যেমন সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, তেমনই সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে বিজেপির ঝুঁকে যাওয়া শ্রমিকদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে নিজেদের দিকে টানতে পারবে শাসক শিবির। তাই এবার এই প্রকল্পে বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এব্যাপারে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্প নিয়ে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। আগে মাসিক ছ’হাজার টাকার নীচে যাঁরা আয় করতেন, তাঁরাই এই প্রকল্পে অর্ন্তভূক্ত হতে পারতেন। তা বাড়িয়ে তিনি ১০ হাজার করে দিয়েছেন। এছাড়াও বিড়ি শ্রমিক সহ একাধিক শ্রেণীকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বাম আমলের থেকে এই প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকের সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, আমরা এবছরেই আরও ১৫ লক্ষ নতুন নাম অন্তর্ভূক্ত করতে চাইছি। তাই নতুন করে এসএলও নিয়োগ করা হয়েছে।
যদিও বিজেপি জেলা সহ সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, যে দলের নেতারা সর্বক্ষণ অসামাজিক, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের মুখে কী সামাজিক সুরক্ষার কথা মানায়। ভাড়া করা পরামর্শদাতাদের কথায় চললে কোনওদিনই সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়। মানুষ তৃণমূলের ভাঁওতাবাজি ধরে ফেলেছেন।
সামাজিক সুরক্ষা যোজনা দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের কাছে অত্যন্ত ভরসার। বিশেষ করে দিন আনা দিন খাওয়া অসংগঠিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন জোগায় এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের পরিধি বহু গুণ বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাপ্ত সুবিধাও বেড়েছে। বিড়ি শ্রমিকদের এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা তার মধ্যে অন্যতম চর্চার বিষয়। প্রথম থেকেই বর্তমান সরকার এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার উপর জোর দিয়েছে। এসএলওদের পাশাপাশি প্রতিটি মহকুমায় শ্রমিক মেলার আয়োজন করে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। সাধারণের প্রতি বছরে ১০ লক্ষ নাম নথিভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়। কিন্তু এবার লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির পালে হাওয়া লেগেছে। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মন জয়ে শাসক শিবির মরিয়া বলে রাজনৈুতক মহলের মত। আগে যেখানে দু’হাজার এসএলও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, বর্তমানে সেই সংখ্যা তিন হাজার করা হয়েছে। এছাড়াও অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
শ্রম দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় এক কোটি ১০ লক্ষ পরিবার এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। তা আরও বাড়ানোর চেষ্ট চলছে। শাসক দলের একাংশের দাবি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি পরিবার একাধিক সুবিধা পেতে পারে। কোনও শ্রমিক এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হলে তাঁর ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ, বিনামূল্যে চিকিৎসা, পেনশন, মেয়ের বিয়ের সময়ে আর্থিক সাহায্য, এমনকী মৃত্যুকালীন সুবিধাও রয়েছে। এতে শ্রমিক পরিবারের সব সদস্যই উপকৃত হবেন। তাই এই প্রকল্পে সুবিধা দিয়ে শ্রমিক ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলা যাবে বলেই তাঁদের মত।