কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
চিত্তরঞ্জন থেকে দুর্গাপুর বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে একের পর এক বড় কারখানা সচল থাকায় এক সময় গমগম করত শিল্পাঞ্চল। যদিও একের পর এক কারখানার গেটে তালা পড়ায় শিল্পের সেই স্বর্ণযুগ এখন অতীত। এবার শিল্পাঞ্চলের নতুন বিপদ ডেকে এনেছে কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণ নীতি। এএসপি, সিএলডব্লুর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিলগ্নিকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে শিল্পাঞ্চলবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে দু’দিনের চিন্তন শিবিরের আয়োজন করে বিজেপি। জেলাবাসী আশা করেছিলেন, লোকসভায় দুটি আসনেই বিজেপি জয়লাভ করায় এই বৈঠকে শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের কথা ভেবে উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমনকী, এসএস আলুওয়ালিয়া যখন বিজেপির টিকিটে দুর্গাপুর আসনে ভোটে দাঁড়ান তখন এএসপি সহ কারখানা বন্ধের বিষয়ে ও বিলগ্নিকরণ রুখতে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। বৈঠকে তাঁরও যোগ দেওয়ার কথা থাকায় সকলেই আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু, বৈঠক শেষে দিলীপবাবুর মন্তব্য তাঁদের হতাশা বাড়িয়েছে।
বিলগ্নিকরণের সমর্থনে দিলীপবাবু দাবি করেন, সরকারের কাজ ব্যবসা করা নয়। যেটি চলছে সেটি চালাবে। যেটা চলছে না, তার জন্য সরকার বিকল্প ভাববে। অর্থাৎ দুর্গাপুরে এসে বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তে কার্যত সিলমোহর দেন তিনি। তবে বর্ধমান দুর্গাপুরের সংসদ সদস্যের ভূমিকাও অবাক করেছে শিল্পাঞ্চলবাসীকে। তিনি বৈঠকে শেষে বেরিয়ে একাধিকবার অনুগামীদের নিয়ে সেলফি তুললেও। বিলগ্নিকরণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি নীরব থাকেন। অন্যদিকে, চিন্তন বৈঠকে বিজেপির অন্তর্কলহ বারবার প্রকাশ্যে আসায় জেলায় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে দলীয় নেতৃত্ব। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল। ১৯ আগস্ট ওই মাঠেই জনসভায় আয়োজন করছে তারা। সেখানে বিলগ্নিকরণ নিয়ে সোচ্চার হবেন রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা।
এদিকে, ওই দুই কারখানার শ্রমিকরাও এনিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। সেভ সিএলডব্লু জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক নেপাল চক্রবর্তী বলেন, বিজেপি আসলে শিল্পপতিদের প্রতি দায়বদ্ধ। নির্বাচনের সময় যে শিল্পপতিদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল, তাদের হাতেই সরকারি কারখানাগুলি তুলে দেওয়ারব উদ্যোগ নিয়েছে। একইভাবে এএসপি বাঁচাও ডিএসপি বাঁচাও দুর্গাপুর বাঁচাও কমিটির সদস্য বলেন, ওদের নেতাদের কাছ থেকে এর থেকে বেশি আমরা আর কী আশা করব। যারা পাবলিক সেক্টরের ইতিহাস জানে না তারাই এই ধরনের মন্তব্য করতে পারে। এএসপির শ্রমিক অলোক বাউরি, বাবুল মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা দিলীপবাবুর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, চূড়ান্ত অমানবিক মানুষ না হলে এধরনের মন্তব্য কেউ করতে পারতেন না। তবে আমরা কোনওভাবেই এই বিলগ্নিকরণ মানব না। ১৯ আগস্টের জনসভা থেকেই বিজেপি সরকারকে বার্তা দেওয়া হবে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, মানুষ বুঝতে পারছেন, তাঁরা কাদের ভোট দিয়েছেন। এটাই বিজেপির আসল রূপ। প্রার্থী হয়ে যিনি বলেছিলেন এএসপিকে বিক্রি আটকাবেন, তিনি ভোটে জিতেও নীরব কেন?