পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বকরি ঈদ বা ঈদুজ্জোহা কুরবানি নামে পরিচিত। উৎসবে মূলত কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া হয়। নবাবদের সময়ে লালবাগ শহরে এই উৎসব জাঁকজমক ও আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে পালিত হতো। নবাবদের হেঁসেলে বিরিয়ানি, মাংস, চালের পায়েস, সিমুই সহ হরেক পদ রান্না হতো। কারিগররা রকমারি মিষ্টান্ন তৈরি করতেন। অতিথি আপ্যায়নের পাশাপাশি প্রজাদের বিরিয়ানি ও মাংস দেওয়া হতো। তাই নবাবি আমলের ইতিহ্য মেনে এদিন লালবাগের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিরিয়ানি, মাংস, চালের পায়েস রান্না হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন হয়েছে।
উৎসব উপলক্ষে কয়েকদিন আগে থেকেই সেজে উঠেছে মুর্শিদাবাদ শহর। মসজিদ, মাজারগুলিকে রং এবং আলোকমালায় সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি ঈদগাহ ময়দানগুলিকে পরিষ্কার করা হয়েছিল। এদিন সকালে মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানগুলিতে নামাজ পড়তে যান বহু মানুষ। বহরমপুর, লালবাগ মহকুমার মুর্শিদাবাদ, ভগবানগোলা, লালগোলা, রানিতলা, কান্দি, জঙ্গিপুরে মসজিদ এবং ঈদগাহগুলিতেও একই ছবি লক্ষ্য করা যায়। তবে কয়েকটি মাজারে মহিলাদের নামাজ পাঠের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্থানীয় মহিলাদের একটা অংশ ওই মাজারগুলিতে নামাজ পাঠ করেন। যদিও বেশিরভাগ মহিলা বাড়িতেই নামাজ পড়েছেন।
লালবাগের বনমালিপুর মসজিদ কমিটির এক সদস্য জানান, নামাজ পড়ার জন্য নবাবি আমলে লালবাগ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাতে একাধিক মসজিদ, মাজার নির্মাণ হয়েছিল। এদিন সকালে চাঁদনিচক, বরফখানা, এলাহিগঞ্জ, রোশনবাগ, এনাতুলিবাগ, বনমালিপুর মসজিদ এবং একাধিক ঈদগাহ ময়দানে নামাজ পড়েন মুসলিমরা। চলে কুরবানি পর্ব। তারপরই বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয়ে রান্নার তোড়জোড়। পরিবারের মহিলাদের মধ্যে চরম ব্যস্ততা দেখা যায়। পঞ্চব্যঞ্জন রান্না, অতিথি আপ্যায়নে দম ফেলার ফুরসত ছিল না বাড়ির মহিলাদের। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বিরিয়ানি, মাংস, চালের পায়েস, সিমুই এবং রকমারি মিষ্টান্ন খাওয়াদাওয়া চলে।
মুর্শিদাবাদ শহরের আস্তাবল এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা ইমতিয়াজ শেখ বলেন, আমাদের অন্যতম প্রধান পরব ঈদুজ্জোহা। দেশ-বিদেশে যে যেখানেই থাকুন না কেন ঈদুজ্জোহা বা কুরবানি উৎসবে সবাই পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। গত কয়েকদিন ধরে জেলার বাইরে থাকা বাসিন্দারা পরিবারের সবার সঙ্গে উৎসব পালনের জন্য ঘরে ফিরেছেন।
বরফখানা মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, ঈদুজ্জোহা উপলক্ষে নামাজ পড়া হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে এদিন দেদার খাওয়াদাওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ বাড়িতে বিরিয়ানি হয়েছে। উৎসব উপলক্ষে এদিন মুর্শিদাবাদ শহরের কয়েকটি মহল্লায় গান-বাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। অশান্তি এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিস মোতায়েন করা হয়।