বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, সাহাপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান চলছে, এলাকায় কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।
জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, দু’পক্ষের তরফেই বোমাবাজি হয়েছে। পুলিসকে দলমত নির্বিশেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কাটমানি কেউ নিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার কারও অধিকার নেই। বিজেপি উস্কানি দিয়ে জেলাজুড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে কেন আমাদের নেতার বিরুদ্ধে বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠছে তাও খতিয়ে দেখা হবে, দলীয়ভাবেও তদন্ত হবে।
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও কিছু অসাধু পুলিস বীরভূমকে বারুদের স্তূপে পরিণত করেছে। আমরা কাটমানি নিয়ে আন্দোলন না করলেও সাধারণ মানুষের পাশে আছি। শাসকদলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ উঠছে, এর নিন্দার কোনও ভাষা নেই। আমরা বোমা-বারুদের রাজনীতি বন্ধ করবই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটমানি নিয়ে সাহাপুরে চাপা উত্তেজনা ছিল। এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল তৃণমূলের দাপুটে অঞ্চল সভাপতি শেখ এনামূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি সরকারি বাড়ি তৈরির টাকা, ১০০দিনের কাজের টাকা, এমনকী মানবিক প্রকল্প থেকেও কাটমানি নিয়েছেন। এলাকাবাসীর এই ক্ষোভে উস্কানি দিয়েছিল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া স্থানীয় কিছু নেতাও। এনিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল এনামূলের উপর। মঙ্গলবার স্থানীয় সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে এনিয়ে এনামূল ও তাঁর লোকজনদের বচসা ও মারামারিও হয়। এরপরেই ক্ষোভ চরমে ওঠে। বিরোধী কর্মী-সমর্থক এবং কিছু বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, বুধবার ওই নেতার বাড়ি ঘেরাও করে কাটমানি ফেরত চাওয়া হবে। সেই খবর পৌঁছয় এনামূলের কানে। তিনিও বোমা, অস্ত্র মজুত করতে থাকেন বলে অভিযোগ। এদিন সকালে স্থানীয় বড় মসজিদের কাছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জড়ো হতেই শেখ এনামূল ও তাঁর লোকজন ব্যাপক বোমাবাজি শুরু করে বলে অভিযোগ। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা। মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসেন সদাইপুর থানার ওসি পার্থসারথি মণ্ডল। পিস্তল উঁচিয়ে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও তাঁদের লক্ষ্য করেও বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। অবশেষে ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) অভিষেক মণ্ডলের নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপরেই পুলিস ধড়পাকড় শুরু করে। গ্রেপ্তার করা হয় নেতার দুই ছেলে সহ তাঁর ন’জন অনুগামীকে। আটক করা হয় এনামূলকে।
যদিও শেখ এনামূল বলেন, সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। কোনও কাটমানি নেওয়া হয়নি। বিজেপি ও সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এক হয়ে আমার বাড়ি আক্রমণ করেছিল। যদিও সদ্য বিজেপি নেতা শেখ নবিরের দাবি, এলাকাবাসী কাটমানি ফেরতের আন্দোলন করছিল, আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য শেখ এনামূল ও তাঁর লোকজন বোমাবাজি করেছে। পুলিস ও সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেও বোমা ছোঁড়া হয়।
প্রসঙ্গত, একদা সব্জি বিক্রি করলেও শেখ এনামূল দল করে ফুলেফেঁপে উঠেছেন বলে অভিযোগ। লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত তাঁর দাপটে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। কিন্তু ভোটের ঠিক আগেই তাঁর একাধিক ছায়াসঙ্গীর বিজেপিতে যোগদান ও এলাকায় বিজেপির সংগঠন গড়ে ওঠায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। এদিন তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল বলে এলাকাবাসীর দাবি।