বিদ্যার্থীদের মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে। পঠন-পাঠনে আগ্রহ কম থাকবে। কর্মলাভের সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
মায়াপুরের বামনপুকুর বাজার থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই রাজাপুর গ্রাম। কিছুটা গেলেই জগন্নাথ দেবের মন্দির। মন্দিরের গায়ে শ্বেতপাথরে খোদাই করা জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাস। ইতিহাস বলে, ওড়িশা প্রদেশ থেকে শবর ভক্তরা জগন্নাথদেবকে এনে রাজাপুর গ্রামে স্থাপন করেন। স্থানটি অভিন্ন পুরুষোত্তম ক্ষেত্ররূপে খ্যাতিলাভ করে। বংশ পরম্পরায় শবররা জগন্নাথের সেবা করতে থাকে। এক সময়ে সেবা বন্ধ হয়ে যায়। জগন্নাথদেব লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। পরবর্তীকালে ফটিকচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জগন্নাথদেবের সেবার ভার নেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ইসকন কর্তৃপক্ষ রাজাপুরের জগন্নাথদেবের সেবাকার্য পরিচালনা করছেন। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশচন্দ্র দাস মহারাজ বলেন, রাজাপুর গ্রামে হিন্দু-মুসলমান সকলেই জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা ও রথযাত্রায় একসঙ্গে কাজ করেন। রথযাত্রার দিন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা রাজাপুর মঠ থেকে রথে চেপে আসেন ইসকন মন্দিরে। উল্টো রথে ফিরে যান রাজাপুর মঠে। এই কটাদিন ইসকন মন্দির চত্বরে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলে।
নবদ্বীপের রথযাত্রায় পাঁচটি মন্দিরের রথ এসে ভিড় জমায় নবদ্বীপের পোড়ামাতলায়। শ্রীবাসঅঙ্গন পাড়ার সমাজবাড়ি, বটতলার নিতাই-গৌর-সিতনাথের মন্দির, বৌবাজারের বাসুদেব অঙ্গন, ওলাদেবীতলার সারদেশ্বরী আশ্রম, মহাপ্রভুপাড়ার শম্ভু গোস্বামীদের বাড়ির জগন্নাথ এখানে আসে। রথের দিন রাতে আবার ফিরে যায়। উল্টোরথের দিন আবার ভিড় জমায় পোড়ামাতলায়। প্রাচীন মায়াপুরের জগন্নাথ মন্দিরের রথ প্রাচীন মায়াপুর এলাকায়, মণিপুরের রাজবাড়ির রথ মণিপুর সহ দক্ষিণাঞ্চলে শোভাযাত্রা সহকারে ঘোরে। আবার নিজ নিজ মন্দিরে রাতে ফিরে যায়। একমাত্র গঙ্গানগরের জগন্নাথ আশ্রমের রথ প্রতাপনগরের হীরালাল পাল রোডের আশ্রয় ভবনে আসে। বারো বছর ধরে আশ্রয় ভবন জগন্নাথদেবের মাসিরবাড়ি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রথযাত্রা উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে পোড়ামাতলা, প্রাচীন মায়াপুর, মণিপুর, প্রতাপনগর এলাকায় মেলা বসে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পুলিসি নিরাপত্তা বেড়ে যায়। পোড়ামাতলা দিয়ে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়। রাস্তার দু’পাশে পসরা সাজিয়ে দোকানিদের কেনাবেচা চলে জোরকদমে। রথের জন্য পোড়ামাতলায় স্থায়ী কিছু দোকানদারকে সরে যেতে হয়। নবদ্বীপ থানার আইসি সুবীরকুমার পাল বলেন, রথের দিন সর্বসাধারণের নিরাপত্তার বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোড়ামাতলায় যাতে জনসাধারণের কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য আমরা প্রস্তুত।
নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, রথযাত্রা উপলক্ষে আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছি। জনসাধারণের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে।