বিদ্যার্থীদের মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে। পঠন-পাঠনে আগ্রহ কম থাকবে। কর্মলাভের সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা ভিত্তিক সাংগঠনিক বৈঠক করছেন। গত ২১ জুন নদীয়া জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন মুখ তুলে আনার কথা বলেছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখনও চলার কারণে একাধিক নেতা কড়া ধমক খেয়েছেন নেত্রীর। যেসব এলাকায় খারাপ ফলাফল হয়েছে, সেই সব এলাকার নেতাদের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেছেন তিনি।
দলনেত্রীর বৈঠকের পরেও জেলায় শাসক দলের কোন্দল থামছে না। বরং নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে একাধিক পুরসভার কোন্দল। লোকসভা ভোটের ফলাফলের পরেই একাধিক পুরসভার অনেক কাউন্সিলার বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন। হরিণঘাটা পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে ওই পুরসভাটি শাসক দলের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। চাকদহ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তী ও মন্ত্রী রত্না ঘোষের দ্বৈরথ থামছে না। চাকদহ পুরসভারও সিংহভাগ কাউন্সিলার বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন। বীরনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থকুমার চট্টোপাধ্যায় ও ভাইস চেয়ারম্যান গোবিন্দ পোদ্দারের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। সেখানেও লোকসভা ভোটের পর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। দুজনেই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন। কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অসীম সাহার বিরুদ্ধে দলেরই ৬ জন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলার। এই ৬ জন কাউন্সিলার দলের কোনও বৈঠকে উপস্থিত হচ্ছেন না। এমনকী তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকেও গরহাজির থেকেছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পুর নির্বাচন। চাকদহ ও কৃষ্ণনগর পুরসভার মেয়াদ গত ডিসেম্বর মাসেই শেষ হয়েছে। পুর নির্বাচনে আগে দলনেত্রী দলীয় কোন্দল থামাতে চান। আগামী ১১ জুলাইয়ের বৈঠকে পুরসভাগুলির সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। যদিও ওই বৈঠকে বিধায়কদের ডাকা হয়েছে। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, ওই বৈঠকে ডাক পেতে পারেন পুরসভার চেয়ারম্যানরা ও অন্যান্য নেতারা।
কাটমানি ইস্যু এই মুহূর্তে জলজ্যান্ত। কাটমানি ইস্যুতে নদীয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। খোদ রানাঘাট লোকসভার সাংগঠনিক সভাপতি শংকর সিং এর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে কাটমানির অভিযোগে। এই ইস্যু নিয়েও নেত্রী বিশেষ কড়া বার্তা দিতে পারেন। কাটমানি ইস্যুকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তার নির্দেশিকা দিতে পারেন নেত্রী।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে জেলার একটি আসন ধরে রাখতে পারলেও সামগ্রিকভাবে শাসক দলের বিপর্যয় ঘটেছে। রানাঘাট কেন্দ্রে দুই লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। তাও চিন্তায় ফেলেছে শাসক দলকে। কারণ এই লোকসভার অন্তর্গত তিন বিধানসভা কেন্দ্রে হার হয়েছে তৃণমূলের। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়া, কালীগঞ্জ ও পলাশীপাড়া, নাকাশিপাড়া বিধানসভা থেকে লিড এসেছে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা থেকে বিজেপি ৫৩ হাজার লিড নিয়েছে। কৃষ্ণনগর শহর থেকেই লিড ২৭ হাজার ভোট। শহরের ভোট একচেটিয়া বিজেপি পাওয়ায় নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জেলার মোট ১৭টি বিধানসভার মধ্যে মাত্র ৬টিতে এগিয়ে রয়েছে শাসক দল। বাকি ১১টিতে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ১১টি বিধানসভা এলাকায় কীভাবে সংগঠন মজবুত করা যায়, তারও দিক নির্দেশিকা দিতে পারেন দলনেত্রী।
তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, আগামী ১১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূল ভবনে এ জেলার বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করবেন নেত্রী। আমরা তাঁর নির্দেশ মেনে চলব।