উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। পুরসভায় ক্ষমতায় থাকার পরেও দলের এই ভরাডুবির পর নিজেদের পিঠ বাঁচাতে একাধিক কাউন্সিলার গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এমনকী, দলবদল করতে ইচ্ছুক তৃণমূল কাউন্সিলাদের কথা অনুযায়ী, পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে তড়িঘড়ি তৎপর হয় তৃণমূলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রী মলয় ঘটক পুরুলিয়ায় এসে জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে কাউন্সিলারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কাউন্সিলাদের একাংশ তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন। পুরসভার চেয়ারম্যান এবং দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাজকর্মের বিষয়েও একাধিক অভিযোগ করেন শাসকদলের কাউন্সিলাররা। যদিও ওই বৈঠকের পর মলয়বাবুর পরামর্শ মতো অধিকাংশ কাউন্সিলার দলের প্রতি আস্থা রেখে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেন।
বৈঠকে মলয়বাবু কাউন্সিলারদের একাধিক দাবি রাজ্য নেতৃত্বেকে জানিয়ে তা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন। ওই বৈঠকের পরই কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দলবদল করতে ইচ্ছুক কাউন্সিলাররা। বৈঠকের পরই দলবদল করতে ইচ্ছুক এক কাউন্সিলারের জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীর প্রতিবাদ করার ছবিও ফুটে উঠেছিল। শাসকদল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার পাশাপাশি দল বদলের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী হয়েছিলেন পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিভাস রঞ্জনদাস। আগে কংগ্রেসে থাকলেও গত বিধানসভা ভোটের সময় বিভাসবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটের ফলাফল বেরনোর পরই বিভাসবাবু জানিয়ে ছিলেন, পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলার অন্য চিন্তাভাবনা করছেন। জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে দলবদলের কথা জানানো হবে। যদিও ওই বৈঠকের দিনক্ষণ একাধিকবার পরিবর্তিত হলেও শাসকদলের অধিকাংশ কাউন্সিলারকে নিয়ে দলের অমতে ওই বৈঠক এখনও পর্যন্ত হয়নি। এমনকী, মলয়বাবুর বৈঠকের পরই বিভাসবাবু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে ছিলেন, পুরুলিয়া শহরে তৃণমূলের ঘুরে দাঁড়ানোর আর কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্য চিন্তাভাবনা একমাত্র বিকল্প পথ।
পুরুলিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে লোকসভা ভোটে খারাপ ফলাফলের পর অনেকেই দল বদল করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর চিন্তাভাবনা করলেও পরে তাঁরা নিজেদের মত পরিবর্তন করেন। এবিষয়ে তৃণমূল কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, কোণঠাসা হওয়ার কোনও বিষয় নেই। কোণঠাসা কেন হতে যাব? আমরা যাওয়ার পর অনেকেই লাইন দেবে। তাছাড়া এখনও অনেকেই প্রকাশ্যে আসতে ভয় পাচ্ছে। অন্য দলের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা চলছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও সময় দিতে পারেননি। তাঁদের সময় মতো পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বোর্ড ভাঙার ক্ষমতা তো আমাদের এখনও রয়েছে। কিন্তু, ঋণে জরাজীর্ণ পুরবোর্ডের দায় এখন আমরা মাত্র কয়েকমাসের জন্য নিতে চাইছি না। এদিকে, পুরবোর্ড ভাঙার কথা মুখে বললেও কাদের নিয়ে সেই সংখ্যা হবে তা বলতে পারেননি বিভাসবাবু।
এবিষয়ে পুরুলিয়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, শহরের মানুষ আর তৃণমূল দলটাকে পছন্দ করছে না। কে অন্য দলে যাবে, না যাবে সেটা তাঁদের নিজেদের বিষয়। কাউকে তো আর পায়ে ধরে একসঙ্গে যাওয়ার জন্য ডাকতে পরব না। প্রয়োজনে একা যাব।
এবিষয়ে তৃণমূলের পুরুলিয়া শহর সভাপতি তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, বিজেপি একটা হাওয়া ছড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল কর্মী ও কাউন্সিলারদের দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু, দু’একজন যাওয়ার কথা ভাবলেও সিংহভাগ কাউন্সিলার তৃণমূলেই থাকবেন।
এবিষয়ে বিজেপির পুরুলিয়া শহর সভাপতি সত্যজিৎ অধিকারী বলেন, এখন তো অনেকেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। তবে যেই দলে আসুন না কেন তাঁকে দলের আদর্শ মেনেই আসতে হবে। তাছাড়া বাছাই করেই দলে নেওয়া হবে।