বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
সোমবার রাতে দাঁতনের বালিডাংরি গ্রামে তৃণমূলের এক কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়ে বিজেপি হামাল চালায় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত প্রায় ১২টা নাগাদ তৃণমূল কর্মী চন্দন পাত্রের বাড়ির সামনে চিৎকার চেঁচামেচি শোনা যায়। বাসিন্দারা ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিস এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা বিধায়ক বিক্রম প্রধান বলেন, ওঁরা কেন তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলে বিজেপির কিছু দুষ্কৃতী মদ্যপ অবস্থায় চন্দনবাবুর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায়। এই দেখে বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে তা প্রতিরোধ করেন। দু’জনকে তাঁরা ধরেও ফেলেন। এই সময় বিজেপির দুষ্কৃতীরা হামলা করলে আমাদের দলের কয়েকজন কর্মী জখম হন। চন্দনবাবুর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। চন্দনবাবু সহ দু’জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। যে দু’জনকে বাসিন্দারা ধরে ফেলেন, তাদের পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি মোশাফ মল্লিক বলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই ওই দিন রাতে আমাদের কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে হামাল চালায়। আমাদের কর্মীরা তা প্রতিরোধ করেছেন। আমাদের কয়েকজন কর্মীকে মারধর করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বাকিদের দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পুলিস পক্ষপাতিত্ব করে আমাদের কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে খণ্ডরুইয়ের রসুলপুরে আমাদের দলের এক কর্মীকে মারধর করা হয়।
বিক্রমবাবু বলেন, বিজেপি দুষ্কৃতীরা যেভাবে হামলা শুরু করেছে, তাতে আমাদের কর্মীরা এবার প্রতিরোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে তাদের কর্মী মার খেতেই পারেন।
পুলিস জানিয়েছে, খণ্ডরুইয়ের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেপ্তারের ঘটনার পরই ওই এলাকায় তিন তৃণমূল সমর্থকের খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরানো হয়। দমকল গিয়ে আগুন নেভায়। এলাকায় যায় বিশাল পুলিস বাহিনী।
অন্যদিকে, কেশিয়াড়ির আমলাসাই গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় দু’পক্ষের ১১জন জখম হন। বিকেলের দিকে দু’জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, দু’পক্ষের মধ্যে একটা গণ্ডগোল হয়েছে।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মানস ভুঁইয়া বলেন, এদিন বিজেপি দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীদের উপর অতর্কিতে সশস্ত্র হামলা চালায়। আমাদের চারজন কর্মী গুরুতর জখম হন। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সনাতন দোলই বলেন, তৃণমূল আশ্রিত গুণ্ডারাই আমাদের কর্মীদের বাড়ি চড়াও হয়ে হামলা চালায়। সাতজন কর্মী গুরুতর জখম হন। তাঁদের দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পরে দু’জনকে মেদিনীপুর পাঠানো হয়েছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পবিত্র শীট বলেন, ওরা প্রথমে হামলা চালায়। আমাদের কর্মীরা সেই হামলার প্রতিরোধ করেছে মাত্র।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের বড়হাট এলাকায় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিস এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। বিজেপি নেতা শম্ভু চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূল দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। আমাদের তিনজন কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাপস মাজি বলেন, ওদের নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলেই এই ঘটনা ঘটেছে। এখন তৃণমূলের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবেই যুক্ত নয়।
এদিকে ডেবরার রামচন্দ্রপুরে এদিন সকালে বিজেপির এক কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দলের নেতা কাশীনাথ বোস বলেন, উনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন, সেই সময় তৃণমূল দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনা মাফিক এই হমালা চালায়। যদিও তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অলোক আচার্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ডেবরায় কোনও অশান্তি হয়নি। বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।