বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট ঘোষণার দিন থেকে ১২মে ভোটের দিন পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ২৭৪৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ভোটের দিনই অভিযোগ জমা পড়েছে ১৫০২টি। ন্যাশানেল গ্রিভেন্স পোর্টালে জমা পড়েছে ৬৪১টি, সি ভিজিলে অভিযোগ এসেছে ১৯টি, ১৯৫০ নম্বরে অভিযোগ আসে ৬৮১টি, সিএমএসে(করেসপন্ডেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে) অভিযোগ পড়ে ৪৯টি ও অন্যান্য মাধ্যমে অভিযোগ এসেছে ১১২টি। এরমধ্যে ১৪৫২টি অভিযোগের নিষ্পত্তিও করেছে জেলা প্রশাসন।
অন্যদিকে পুলিস জানিয়েছে, রবিবার সুতাহাটার হোড়খালি সংলগ্ন পার্বতীপুর পতিতপাবন হাইস্কুলের বুথে ঝামেলা পাকাতে আসা দুই অভিযুক্তকে অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপি সহ বিরোধীদের দাবি, অসম রাইফেলসের জওয়ানরা ভোট লুট করতে আসা মোট ১২জন দুষ্কৃতীকে অস্ত্রসহ হাতেনাতে পাকড়াও করেছিল। তাদের স্কুলের মাঠে বসিয়ে জামা ও গেঞ্জি খুলতে বাধ্য করানো হয়। এমনকী, তাদের দু’হাত উপর দিকে তুলতে বাধ্য করে জওয়ানরা চড় থাপ্পড়ও মারে। সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এরপর অভিযুক্তদের পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হলেও তাদের মধ্যে মাত্র দু’জনকে গ্রেপ্তার করে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এবিষয়ে হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার পারিজাত বিশ্বাস বলেন, খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করব।
এদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠকে বিজেপির তরফে বিষয়টি পর্যবেক্ষককেও জানানো হয়। এছাড়া বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের তরফে একযোগে হলদিয়া ও নন্দীগ্রামের প্রায় ২০০টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিসাইডিং অফিসারদের ডায়েরিতে জেলার কোনও বুথ দখল হয়ে যাওয়া বা ছাপ্পা ভোট দেওয়ার কথা লেখা নেই। প্রিসাইডিং অফিসারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সব জায়গায় ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এমনকী, প্রশাসনের কাছে হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে বুথ দখল করে ছাপ্পার অভিযোগ আসা মাত্রই প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রেও প্রিজাইডিং অফিসাররা বুথ দখল বা ছাপ্পার অভিযোগ স্বীকার করেননি। এছাড়া মাইক্রো অবজার্ভার বা ভোটের নজরদারিতে থাকা অন্যান্য আধিকারিকের কাছ থেকেও এমন তথ্য পায়নি কমিশন।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের দাবি, পুনর্নির্বাচন শুধু মুখের কথায় হয় না। তার জন্য বিভিন্ন স্তরের তথ্য থাকা প্রয়োজন। তাই বিরোধীরা যাই অভিযোগ করুক না কেন, হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, হলদিয়ার ১৫৩টি বুথ, নন্দীগ্রামের ৩৩টি বুথ ও মহিষাদলের ১২টি বুথে দেদার ছাপ্পা ভোট দিয়েছে তৃণমূল। আমরা সমস্ত তথ্য কমিশনে জানিয়েছি। মোট ১৯৮টি বুথে আমরা পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারী বলেন, হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে বুথ দখল করে ইচ্ছেমতো ভোট লুট করেছে শাসক দল। বুথ দখল করতে আসা ১২জন সশস্ত্র দুষ্কৃতীকে অসম রাইফেলসের জওয়ানরা গ্রেপ্তার করেন। সেই ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অথচ পুলিস দু’জনকে গ্রেপ্তার করে বাকিদের ছেড়ে দিয়েছে। পুলিস প্রশাসন শাসক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট লুটে শামিল হয়েছিল। অবিলম্বে নন্দীগ্রাম ও হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন না হলে প্রার্থী সহ কর্মীরা অনশনে বসবেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, প্রত্যেকবার ভোট শেষ হলেই বিরোধীরা বুথ দখল, ছাপ্পার অভিযোগ তোলে। এটা ওদের এক ধরনের অভ্যাস। আসলে এই জেলায় সংগঠনহীন বিরোধীরা নিজেদের মুখ বাঁচানোর জন্য আগে থেকে হারের সাফাই দিতে চায়। পূর্ব মেদিনীপুরের মতো শিক্ষিত জেলায় এসব জিনিস চলে না। এখানে মানুষ উৎসবের মেজাজে ভোট দেন। ওরা প্রশাসনিকভাবে পুনর্নির্বাচনের দাবি না করে শুধুমাত্র প্রচার পাওয়ার জন্য সংবাদ মাধ্যমে এই দাবি করছে।