বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
এদিন ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার আগে থেকেই জেলার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ভোটাররা লাইন দিতে শুরু করেন। বাঘমুণ্ডির বাড়েরিয়া প্রাথমিক স্কুলের ২৪০/২৫২ নম্বর বুথে এদিন ৭টার আগেই মহিলাদের লম্বা লাইন দেখা যায়। ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রায় ৬০টির বেশি ভোট হয়ে যাওয়ার পর একজন ভোটার ইভিএম উল্টো করে রাখার অভিযোগ করেন। তারপরই এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসও সরব হয়। প্রিসাইডিং অফিসার প্রথমে ইভিএম সঠিক অবস্থানে আনতে না চাইলেও পরে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপে ইভিএম সোজা করে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে শুরু হয়। বাঘমুণ্ডি হাইস্কুলে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ গিয়ে দেখা যায়, তিনটে বুথেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তবে ভোটারদের লাইনের দিকে কোনও আচ্ছাদনের ব্যবস্থা ছিল না। অযোধ্যা পাহাড়ের উপরে ২৪০/২৫৪ বুথে গিয়ে দেখা যায় চারজন কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং একজন পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের কর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।
সকাল ১০টা পেরিয়ে গেলেও এদিন তাপপ্রবাহ সেভাবে শুরু না হওয়ায় ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েও খানিকটা স্বস্তিতে ছিলেন মাঠা নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক স্কুলের ভোটাররা। গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই বুথে ভোট লুটের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। যদিও এদিন সম্পূর্ণ উল্টোচিত্র দেখা মেলে। ওই বুথে ভোট দিয়ে বেরনোর পথেই গৃহবধূ সমলি মাঝি বলেন, গতবার এই বুথে অশান্তি হয়েছিল। তাই সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছি। যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারি। এদিন আকাশও মেঘলা রয়েছে। ভোটপরবে এদিন আবহাওয়া সাধারণ মানুষের সাথ দিয়েছে।
বলরামপুরের ফুলচাঁদ হাইস্কুল, ছোটগাদো প্রাথমিক স্কুলে সকালে সামান্য বচসা হলেও বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে এদিন বিকেলে বলরামপুরের ফুলচাঁদ হাইস্কুলের কিছুদূরে তৃণমূল কর্মী এবং বজরং দলের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় বিজেপির স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সহ মোট দু’জন জখম হন। পরে পুলিস লাঠিচার্জ এবং ব্যাপক পুলিস বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
মানবাজার রাধামাধব হাইস্কুলে গিয়ে এদিন দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা স্কুলের একটি গাছের তলায় বসে রয়েছেন। আর বুথের মুখে রয়েছেন রাজ্য পুলিসের এক কর্মী। ওই বুথে একে অপরের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় থেকে শুরু করে হাসিঠাট্টার পরিবেশেই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন বাসিন্দারা। মানবাজারের শ্যামপুর প্রাথমিক স্কুলে আবার গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের মূল গেটের বাইরে ভোটারদের লাইন। নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারদের ধাপে ধাপে বুথের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ওই বুথের ভোটার আদিত্য মাহাত, সুজিত মাহাত বলেন, ভোট মানে আমাদের কাছে কার্যত পরবের সমান। কারও সঙ্গে ঝামেলা তর্ক বিতর্ক কিছুই এখানে হয় না। যে যার নিজের ভোট নিজে দেন।
ওই স্কুল থেকেই খানিক এগিয়েই জিতুজুড়ি হাইস্কুল। সেখানে দুপুরে গিয়ে পৌঁছন বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় মাহাত। তিনি বলেন, তৃণমূল সর্বত্র ভোট লুটের চেষ্টা করেছিল। বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছে। ওই কেন্দ্রে বুথের ১০০মিটারের মধ্যে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় খোলা রাখাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির বচসাও হয়। পুরুলিয়া শহর, জয়পুর, ঝালদা সহ একাধিক এলাকায় এদিন ইভিএম খারাপ থাকার জন্য ভোটগ্রহণ দেরিতে শুরু হয়।
অন্যদিকে, এদিন সকালের দিকে তৃণমূল, বিজেপি সহ অধিকাংশ বড় দলের ক্যাম্প অফিসে ভিড় থাকলেও দুপুরের পর বিরোধীদের ক্যাম্প অফিসগুলি অধিকাংশ জায়গায় ফাঁকা হয়ে যায়। তবে এদিন ফরওয়ার্ড ব্লক বা বামফ্রন্টের ক্যাম্প অফিসের সংখ্যা ছিল খুবই কম।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, কাশীপুর ছাড়া পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্যত্র এদিন ভোটগ্রহণ মোটের উপর নির্বিঘ্নে হয়েছে। এবিষয়ে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাত বলেন, মোটের উপর ভোট নির্বিঘ্নে মিটলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী এদিন বুথে বুথে বিজেপির হয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক। এবিষয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী বীরসিং মাহাত বলেন, একদমই ছোট কিছু ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।