বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
মৃতা হোমগার্ডের নাম দেবশ্রী ঘোষ(৩২)। তাঁর বাপের বাড়ি কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার দিগনগরের হাতিশালায়। শ্বশুরবাড়ি শান্তিপুরে। গত ৮ মাস আগে হোমগার্ডের চাকরিতে যোগ দেন দেবশ্রী। চাকরিতে যোগদানের পর উত্তর দিনাজপুরে ৪২ দিনের ট্রেনিং করে আসেন দেবশ্রী। তারপর চাপড়া থানায় হোমগার্ড হিসেবে কাজে যোগ দেন। ২০ দিন হল কৃষ্ণনগর পুলিস লাইনে বদলি হন। তাঁর ১১ মাস বয়সি এক কন্যাসন্তান রয়েছে। স্বামী অমিত দালাল পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। ২০১২ সালে অমিত ও দেবশ্রী প্রেম করে বিয়ে করেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ পুলিস লাইনে ডিউটিতে যোগ দেওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলেন দেবশ্রী। অন্য এক হোমগার্ডের বন্দুকে গুলি ভরা হচ্ছিল। সেই সময় অসাবধানবশতঃ বন্দুক থেকে গুলি বের হয়। এবং গুলি হাত ফুঁড়ে পেটে ঢুকে যায়। ঘটনার পরেই অন্যান্য পুলিস কর্মীরা দ্রুত শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান দেবশ্রীকে। ভর্তি করার পরেই মারা যান তিনি। হাসপাতালে জখম হোমগার্ডের ছবি তুলতে গেলে পুলিস কর্মীরা সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। এক চিত্র সাংবাদিককে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। যা নিয়ে পুলিস মহলেই নিন্দার ঝড় উঠেছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যে হোমগার্ডের বন্দুকে গুলি ভরা হচ্ছিল, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। গুলি ভরতে সহায়তা করছিলেন দেবশ্রী। তখন অসাবধানবশতঃ গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত ফরেন্সিকের দাবি তুলেছিল মৃতার পরিবার। সেই দাবি অনুযায়ী কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে মৃতদেহ।
বোনের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না দাদা বিপ্লব ঘোষ। তিনি বলেন, বোনের পেটে গুলির তিনটে টুকরো রয়েছে। হাত ফুঁড়ে গুলি পেটে ঢুকে। আমরা ফরেন্সিক ময়নাতদন্ত চেয়েছি। কলকাতায় ময়নাতদন্ত হবে। আমাদের কাছে এই ঘটনা পুরো এখন অন্ধকারে। কীভাবে চলল গুলি, তা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। আমরা শুনেছি, এক মানসিক ভারসাম্যহীন হোমগার্ডের বন্দুক থেকে গুলি চলেছে। মানসিক ভারসাম্যহীন হোমগার্ডকে কেন পুলিস লাইনে রাখা হবে? কেন তাঁর চিকিৎসা হবে না? আমার বোনটা অকালে চলে গেল। আমরা পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। এবং যদি কেউ দোষী থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানাব। মৃতার স্বামী অমিত দালাল বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। আমাদের ছোট্ট এক মেয়ে রয়েছে। এবার তাকে কে দেখবে?
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রতি পুলিসের এই আচরণ নিয়ে পুলিস মহলের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক চিত্র সাংবাদিক বলেন, জখম হোমগার্ডের ছবি তোলা হচ্ছিল। তখনই আচমকা এক পুলিস কর্মী এসে গায়ে হাত দেন। এবং ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দেন। পুলিসের কাছে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। তারপরেও পুলিসের এমন আচরণ বিস্মিত করেছে। জেলার পুলিস সুপার রূপেশ কুমার বলেন, অন্যের বন্দুক থেকে দুর্ঘটনায় গুলি চলেছে। তাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন এক হোমগার্ড। ঘটনার তদন্ত চলছে।