শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির নাম অশোকরঞ্জন বিশ্বাস ও মহুয়া বিশ্বাস। বাড়ি সোদপুরের আগরপাড়ায়। জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে ওই দম্পতি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তাঁরা আপ শান্তিপুর লোকাল ধরে চলে আসেন শান্তিপুর স্টেশনে। পরে শান্তিপুরের বাবলা এলাকায় তাঁদের উদ্দেশ্যহীন ও ঘোরাঘুরি করতে দেখেন শান্তিপুরের স্থানীয় একদল যুবক। পরে তাঁরাই ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে তুলে দেন শান্তিপুর থানার পুলিসের হাতে।
শনিবার শান্তিপুর থানার পক্ষ থেকে ওই দম্পতির জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়। শনি ও রবিবার রাতে শান্তিপুরেই থাকেন তাঁরা। এদিকে অশোকবাবুর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাই এই বৃদ্ধ বয়সে তাঁকে চোখে হারাতে চান না স্ত্রী মহুয়াদেবী। শান্তিপুর থানার পক্ষ থেকে সোমবার ওই দম্পতিকে নিয়ে আসা হয় রানাঘাটের মহকুমা শাসকের কাছে। সারাদিন এসডিও দপ্তরেই ছিলেন তাঁরা। বৃদ্ধ অশোকবাবু বলেন, আমি সেলস ট্যাক্সের অ্যাডিশনাল কমিশনার ছিলাম। ২০১৫সালে ৩১জানুয়ারি আমি কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছি। বর্তমানে প্রায় ৪৬ হাজার টাকা পেনশন পাই। আমার একমাত্র ছেলে। কিন্তু বছর কুড়ি আগে ছেলে আমাদের অমতে বিয়ে করে। যদিও পরে আমরা তা মেনেও নিই। ছেলের দুর্ঘটনার পর চিকিৎসার কারণে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ২০০৯সালে সোদপুরের বাড়ি বিক্রি করেছি। বর্তমানে আগরপাড়ায় স্টেশনের পাশে বাড়ি ভাড়া করে থাকতাম। কিন্তু ছেলে, বউমা ও বউমার মায়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যার কথা ভাবি। সেজন্যই বাড়ি থেকে শনিবার সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আর কোনওদিন ছেলের কাছে ফিরতে চাই না।
অশোকবাবুর স্ত্রী মহুয়াদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সবটাই আমাদের কপালের ফের। যে কারণে আজ আমরা পথে পথে ঘুরছি। ছেলে ও বউমা আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। বাধ্য হয়েছি আমরা বাড়ি ছেড়ে আসতে। এর আগেও এমন অশান্তির কারণে ঝাড়খণ্ডে গিয়ে ১৫দিনের জন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। এই বয়সে আমরা সবার কাছে বোঝা হয়ে গিয়েছি। কোলে-পিঠে করে বড় করা দুই নাতনির কথা মনে পড়ছে খুব।
এব্যাপারে রানাঘাটের এসডিও মণীষ ভার্মা বলেন, সমস্ত বিষয়টা আমি শুনেছি। ওঁরা বাড়ি যেতে চাইছেন না। আপাতত রানাঘাটেই আমি তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। প্রাথমিকভাবে নতুন করে অশোকবাবুর এটিএম কার্ড ও অ্যাকাউন্ট চালু করে সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা যাতে ঢোকে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তার জন্য বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে। প্রশাসন ওই দম্পতির পাশে আছে।