বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরের মতো এবারও বালি হাইস্কুলে সরস্বতী পুজো হয়েছিল। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জন করতে স্কুল থেকে কিছু দূরে বালি বাজার সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে যাওয়া হয়। প্রায় ২৫জন ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে যান। বাকি শিক্ষকরা মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এদিন আসন ঠিক করছিলেন। বিসর্জনের সময় কোনওভাবে তলিয়ে যায় আকাশ। পরে তাকে উদ্ধার করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই বাসিন্দারা স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেই সময় স্কুলে থাকা কয়েকজন শিক্ষককে মারধর করা হয়। আতঙ্কে শিক্ষকরা স্কুলের একটি ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অয়ন পাল, ভোলানাথ কামিল্যা বলেন, প্রতিমা নিরঞ্জন করার সময় শিক্ষকরা বাঁধে ছিলেন। ছাত্রটি তলিয়ে গেলেও তাকে উদ্ধার কাজে শিক্ষকরা প্রথমদিকে এগিয়ে যাননি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ওই স্কুলের শিক্ষক চন্দন ঘোষ, সুদীন কুণ্ডু বলেন, নদের ওই অংশে বেশি জলই ছিল না। তাই ছাত্রটির তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রথমে বুঝতে পারা যায়নি। পরে প্রত্যেকেই জলে নেমে ওকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। জনতা উত্তেজিত হয়ে আমাদের মারধর করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আকাশ বরাবর পড়াশোনায় মেধাবী ছাত্র। সে ওই স্কুলেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। তারপর বিজ্ঞান নিয়ে সেখানে ভর্তি হয়। আকাশের বাবা সমীর চক্রবর্তী পুরোহিতের পাশাপাশি টোলে শিক্ষকতার সঙ্গেও যুক্ত। দুই দিদি বাইরে পড়াশোনা করছেন। তবে আকাশ প্রতিমা বিসর্জনে গেলেও সে সাঁতার জানত না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এদিন আকাশের বাড়িতে গেলেও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। প্রত্যেকেই শোকে মুহ্যমান। তার মা ঘটনার কথা শুনেই সংজ্ঞা হারান।
আকাশের সহপাঠী অনুরাধা পণ্ডিত ও অষ্টমী পোল্লে বলে, ও সবসময় আমাদের সঙ্গে মজা করত। এদিনও আনন্দ করতে করতেই একসঙ্গে প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়েছিলাম। ও জলে তলিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে সবাই ভেবেছিল, আকাশ মজা করছে। পরে সত্যিই ও তলিয়ে যায়।
ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপনকুমার মান্না বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। কেবল একটি ছাত্র প্রতিমা বিসর্জন করবে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আকাশ বাড়ি থেকে ঘাটে গিয়েছিল। তবে ওর তলিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে থাকা শিক্ষকদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়ে ছিলেন।