বিএনএ, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় সরকারি প্রকল্পসমূহ পরিদর্শনের পর সেচদপ্তরের কাজের ঢালাও প্রশংসা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সেচ ও বন বিষয়ক বিধানসভার আশ্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান সুজনবাবু শুক্রবার বিকেলে বাঁকুড়া সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি সেচদপ্তরের কাজের প্রশংসা করেন। এই জেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে চেকড্যাম তৈরি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। রাজ্য সরকারের প্রশংসা করার পাশাপাশি সুজনবাবু এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মুখে সেচদপ্তরের স্তুতির বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খরাপ্রবণ বাঁকুড়ায় তৃণমূল জমানায় সেচদপ্তর একাধিক প্রকল্প রূপায়ণ করেছে। ২০১১সালের পর জেলায় ১৫টি চেকড্যাম তৈরি হয়েছে। মজে যাওয়া প্রায় ১০০কিলোমিটার সেচখাল সংস্কার করা হয়। ভাঙন রোধে ৩২.৭৩কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর পাড় বাঁধানোর কাজ হয়। রুখাশুখা বাঁকুড়ায় ওইসব প্রকল্প রূপায়ণের ফলে অনেকের সুবিধা হয়। এদিকে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আশ্বাসন কমিটি জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকা পরিদর্শন করে। আধুনিক উপায়ে জৈব পদ্ধতিতে গাছের চারা তৈরি দেখতে এদিন দুপুরে খাতড়া বন দপ্তরের নার্সারি পরিদর্শন করে দলটি। ওই দলে আশ্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এবং ৫বিধায়ক সহ রাজ্য বন বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি অরিন্দম চৌধুরী, বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের আধিকারিক দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধান ও খাতড়া বন দপ্তরের রেঞ্জার প্রবীর চক্রবর্তী ছিলেন।
নার্সারি ঘুরে দেখে সুজনবাবু বলেন, আমরা খাতড়ার জীবনপুর নার্সারিতে এসে দেখলাম কীভাবে কর্মীরা কাজ করছেন। তাঁদের কী সুবিধা অসুবিধা রয়েছে। বনাঞ্চল আমাদের রাজ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে আমরা দেশের মধ্যে পুরস্কার পেয়ে আসছি।
পরে এদিন বিকেলে বাঁকুড়া সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের আধিকারিক, বন ও সেচ দপ্তরের লোকজনের সঙ্গে কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পঞ্চায়েত দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, বিধায়ক অরূপ খাঁ, জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সুজনবাবু বলেন, চেক ড্যাম তৈরির ক্ষেত্রে বাঁকুড়ায় ভালো কাজ হয়েছে। কংসাবতী ড্যামের জলে বহু মানুষ চাষের কাজ করছেন। প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সেচ দপ্তর উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে। ওই দপ্তরের কাজে আমরা খুশি। তবে বড়জোড়া সহ দু-একটি জায়গায় সেচখালের জল পেতে চাষিদের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি জেলায় বনসৃজনের কাজও ভালো হয়েছে।
সুজনবাবু আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতির জন্য গন্ধেশ্বরী-দ্বারকেশ্বর প্রকল্প বাম আমল থেকে আটকে রয়েছে। তারজন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। বিষয়টি নিয়ে ফের কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করা হবে। পরিদর্শন ও বৈঠকে উঠে আসা বিষয়গুলি নিয়ে আমরা বিধানসভায় রিপোর্ট জমা দেব। আশা করি, আগামী দিনে উঠে আসা সমস্যাগুলির সমাধান হবে।