বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ওই শ্রমিক কৃষ্ণ রবিদাস পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। বেঙ্গালুরুতে মাটির নিচে পাইপলাইনের কাজ করতেন। পাঁচমাস ধরে সেখানেই কাজ করছিলেন। আগামী ১২ জুন ছোট বোনের বিয়ে। তাই তিনি বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিশপ্ত সেই ট্রেনই তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আর সেই খবর পৌঁছতেই পরিবারে এখন বিয়ের আনন্দ চরম শোকে পরিণত হয়েছে। বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের ঠিক আগেই ছোট ছেলের মৃত্যু সংবাদে গোটা পরিবার শোকাচ্ছন্ন। বৃদ্ধ বাবা মা ভেঙে পড়েছেন ছেলের মৃত্যুতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কৃষ্ণ রবিদাসের পরিবার ভীষণ দুঃস্থ। চাষ আবাদ করার মতো জমি জায়গাও নেই। তাঁরা চার ভাই ও দুই বোন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা রয়েছেন। ভাইদের মধ্যে কৃষ্ণ সব ছোট।
দাদা অশোক রবিদাস এদিন বলেন, ভাই বেঙ্গালুরু থেকে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিল। সে জেনারেল কামরায় ছিল। শুক্রবার বিকেলে ভাই ফোনে জানিয়েছিল ট্রেন এখন ট্রেন ওড়িশায় ঢুকেছে। আমি তাকে ভালো ভাবে বাড়ি ফিরতে বলি। সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে তার ফোন বন্ধ। কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। ওই ট্রেনের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রবিবার ভুবনেশ্বর পৌঁছায়। দু’দিন তার কোন খোঁজ খবর পাইনি। এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরেছি। একের পর এক দেহ দেখেছি। একটা দেহর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ি। মুখ থেঁতলে যাওয়ায় কিছু চেনা যাচ্ছিল না। পরে পরনের প্যান্ট এবং তার বেল্ট দেখেই বুঝতে পারি এটা ভাইয়ের দেহ। অশোক বলেন, বর্তমানে আমি ভুবনেশ্বরেই আছি। আমার রক্ত নেওয়া হয়েছে ডিএনএ টেস্ট করার জন্য। ওই টেস্টের রিপোর্ট আসলে দেহ হস্তান্তর করা হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ছোটছেলে যে আর বেঁচে নেই, বড়ছেলের কাছে তা শুনেই মঙ্গলবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা যশোদা রবিদাস। বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অশোককেই খোঁজ নিতে পাঠিয়েছিলাম। এবার আমার কী হবে? আর বাবা হেমন্ত রবিদাস বলেন, ১২জুন আমার ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই কৃষ্ণকে বাড়ি ফিরতে বলি। বিয়ের প্ৰস্তুতির মাঝেই ছোট ছেলের প্রাণ গেল। এ ধাক্কা যে আর সইতে পারছি না ভগবান!