বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার নাগরাকাটা চা বাগানের ১৩ জন ও বীরপাড়া চা বাগানের একজন বেঙ্গালুরু থেকে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে কলকাতায় ফিরছিলেন। সেখান থেকে নাগরাকাটা আসার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তার আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় আচমকাই বালেশ্বরের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে আর এতেই সাগর খেরিয়ার মৃত্যু হয়। দু’জন আহত হয়েছে। ১৪ জনের মধ্যে রোহিত গোস্বামী নামে একজন শনিবার কলকাতা থেকে ফোনে বলেন, আমাদের সকলেরই অল্পবিস্তর আঘাত লেগেছে। কারো বুকে ব্যথা, কারো মাথায় চোট লেগেছে। আক্ষেপের সুরে বলেন, গুরুতর আহত ছাড়া কারও সেভাবে চিকিৎসা করা হচ্ছে না।
মৃত সাগরের বাবা বুধনাথ খেরিয়া বলেন, আমার দুই ছেলে সাগর ও শিব চা বাগানে কীটনাশক স্প্রে’র কাজ করত। কাজটা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমার বরাবরই ভালো লাগেনি। তাই দুই ছেলেই বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে গিয়েছিল। সাগর ফিরছিল। কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হল না। রাক্ষুসে ট্রেন আনার ছেলেকে কেড়ে নিল।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই রাত থেকে ফুটবল লাইনে কোনও বাড়িতে উনুন জ্বলেনি। গোটা গ্রামেই এখন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। সাগরের বাবা বলেন, আমরা রাত আটটার মধ্যে খেয়ে নিই। কিন্তু এদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মোবাইলে ফোন আসে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এরপর মোবাইলে ও টিভিতে দেখি। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে সাগরকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। রাত আটটার সময় আবার ফোন আসে সাগর নেই, মারা গিয়েছে। একথা শোনার পর নিজেদের ঠিক রাখতে পারিনি। পাশের ফুটবল মাঠে সারারাত বসেছিলাম।
নাগরাকাটার বিডিও বিপুলকুমার মণ্ডল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে নাগরাকাটা চা বাগানের ১৩ জন ও বীরপাড়া চা বাগানের এক জন, মোট ১৪ জন ফিরছিলেন। কলকাতায় যাঁরা চলে এসেছেন, তাঁদের নাগরাকাটায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মৃতদেহও আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা তাঁদের পাশে আছি।
নাগরাকাটা চা বাগানের ১০ জন বর্তমানে কলকাতার একটি ধর্মশালায় আছেন। আর বাকি দু’জন মৃত সাগরের দেহের সঙ্গে রয়েছেন।