কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ময়নাগুড়ির শহিদগড় পাড়ায় এই স্কুল স্থাপিত হওয়ার কারণে এর নামকরণ হয়েছে শহিদগড় হাইস্কুল। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা যোগেন্দ্রনাথ রায় ও ভবেন্দ্রনাথ রায় স্কুলের জন্য জমি দান করেছিলেন। এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াতে স্থানীয় বাসিন্দা সুরেন সরকার এগিয়ে আসেন। তিনিই পড়ুয়াদের পাঠদান শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে এই স্কুল সরকারি খাতায় নথিভুক্ত হয়। সেসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মিহির দাশগুপ্ত। তিনি দীর্ঘ ৩৬ বছর এই স্কুলের দায়িত্ব সামলেছেন।
একসময় শহিদগড় হাইস্কুলে শুধুমাত্র পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হতো। পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হয়। ১৯৮০ সালে এই স্কুলে শুরু হয় মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠদান। ২০১২ সালে শুরু হয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ক্লাস।
শহিদগড় হাইস্কুলে মোট পড়ুয়া ৯০০ জন। স্থায়ী শিক্ষক, শিক্ষিকা রয়েছেন ২০ জন। পার্শ্বশিক্ষক, শিক্ষিকা আছেন ন’জন। গ্রুপ ডি স্টাফ একজন ও করণিক রয়েছেন একজন। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে পড়ার সুযোগ রয়েছে। আছে কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, বায়োলজি, জিওগ্রাফি ও কম্পিউটার ল্যাব। এখানে পরিবেশবিদ্যা নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে মাধ্যমিক পাশ করার পর ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল রিপেয়ারিং কোর্স সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শেখানো হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতে সুনামের সঙ্গে এগিয়ে চলার পথ প্রশস্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন শিক্ষক, শিক্ষিকারা।
স্কুলে পাঠরত ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকরা বলেন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকের অভাব রয়েছে এখানে। আরও মসৃণভাবে পঠনপাঠন চালাতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ানোর জন্য এখানে শিক্ষক, শিক্ষিকা নিয়োগ করা দরকার।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের স্বীকৃতি পেলেও কোনও শিক্ষক দেওয়া হয়নি। এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমন ছাত্রের সংখ্যা প্রচুর। শিক্ষকরা বলেন, এখান থেকে পাশ করে এই স্কুলেই শিক্ষকতা করছেন দীপক চক্রবর্তী, ফুলেশ্বর মল্লিক। এছাড়াও এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, রেল, পুলিস, ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, স্কুল পরিদর্শক, অধ্যাপক হয়েছেন অনেকে। ভবিষ্যতে এই স্কুল ময়নাগুড়িতে আরও ভালো ছাত্রছাত্রী গড়ে তুলুক, এমনটাই চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সুব্রত ভাদুড়ি বলেন, আমাদের সাফল্যের উৎস টিমওয়ার্ক। আমরা প্রত্যেক শিক্ষক, শিক্ষিকা যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করিয়ে থাকি। বিজ্ঞান বিভাগ, কলা বিভাগ, ভোকেশনাল বা বৃত্তিমুখী শিক্ষা, সবক্ষেত্রেই এই স্কুল তার নিজস্বতা বজায় রেখেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো, আঁকা, বিতর্ক সভা প্রভৃতি সহ পাঠ্যক্রমিক দিকগুলি নজর দেওয়া হয়। কোভিড পরিস্থিতির সময় নিয়মিত পড়াশোনা চালানো হয়েছে অনলাইনে। এছাড়াও আমাদের শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রান্তে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের স্কুলের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। প্রতিবছর আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হয়। সেকারণে প্রচুর ছাত্রছাত্রী আমাদের স্কুলে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়।