রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
ইংরেজ সাহেবদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের তৎকালীন বাঙালি মহকুমা শাসক এস দাশগুপ্ত ১৯৩৭ সালে তাঁর অফিস চত্বরে প্রথম দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। আজ থেকে ৮৬ বছর আগে এভাবেই সূচনা হয় আলিপুরদুয়ার নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির দুর্গাপুজো।
সেই পুজোয় ঠাকুর দেখতে সাহেবের কুঠি ও বক্সা ফোর্ট থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে আসতেন ইংরেজ সাহেবরা এবং তাঁদের স্ত্রী সন্তানরা। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৩৮ সালে মহকুমা শাসকের অফিস চত্বর থেকে দুর্গাপুজোটি চলে আসে শহরের পার্ক রোডে। তারও দু’বছর পর অর্থাৎ ১৯৪০ সাল থেকে আজও শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাধব মোড়ের পাশে বর্তমান ঠিকানায় স্থায়ী মন্দিরে নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির পুজো হয়ে আসছে। স্থায়ী মন্দির তৈরির জন্য সেই সময়েই সরকার থেকে জমি দান করা হয়েছিল।
নিউটাউন দুর্গাবাড়ির পুজোয় স্পনসর্ড, থিমপুজো বা আলোর জৌলুস মিলবে না। কিন্তু, যেটা মিলবে তা হল চিরাচরিত সাবেকিয়ানা ও অনাবিল নিষ্ঠা। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও নানা শাস্ত্রীয় বিধির অনুশাসন অক্ষরে অক্ষরে মেনে এখানে দুর্গাপুজো হয়। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় আজও চালকুমড়ো বলি দেওয়ার প্রথা চালু আছে। এখানে মায়ের সন্ধিপুজো হয় খুব বড় আকারে। নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির সভাপতি আশিস দত্ত বলেন, সরকারি দান করা জমিতেই গড়ে উঠেছে আমাদের দুর্গাবাড়ি মন্দির। এই স্থায়ী দুর্গাবাড়ি মন্দিরে গণেশ, কালী, রাধাকৃষ্ণ, শিবলিঙ্গ ও নবগ্রহ মন্দিরও আছে। আছে বাবা লোকনাথ ও বজরংবলির মন্দিরও। মন্দিরে সারা বছর নিত্যভোগ দেওয়া হয়। স্থায়ী মন্দিরে প্রতিবছর দুর্গাপুজো হয়। তবে পুজোর পর মন্দিরে স্থায়ীভাবে দুর্গা প্রতিমা রেখে দেওয়া হয় না। প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির বর্তমানে শতাধিক সদস্য আছেন। মন্দির সমিতির সদস্যরাই দুর্গাপুজোর জন্য চাঁদা দেন। বাইরে থেকে সেভাবে চাঁদা সংগ্রহ করা হয় না। নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির তিনজন স্থায়ী পুরোহিত আছেন। তাঁরাই এবারও পুজো করবেন। প্রতিবছরের মতো এবারও স্থায়ী মন্দিরে মায়ের মূর্তি তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পী গোপাল পাল। নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির সম্পাদক সঞ্জীব ধর বলেন, রবিবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি আমাদের দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। ভক্তরা গোটা শহর ঘুরে প্রতিমা দেখার পর এখানে একবার আসবেনই। এমনই মাহাত্ম্য নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির দুর্গাপুজোর।
নিউটাউন দুর্গাবাড়ি মন্দির সমিতির সদস্য দিগ্বিজিয় পাল, মৃণাল চক্রবর্তী, বুবুন দে, খোকন তরফদার, দিবাকর রায়, ব্রজগোপাল সাহা ও সুদীপ সরকার বলেন, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতাই এই পুজোর মূল মন্ত্র।