পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই কলকাতায় শহিদ দিবসের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুড়িতে জিএসটি নিয়ে সরব হন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্যাকেটজাত মুড়িতে ৫ শতাংশ হারে জিএসটি বসিয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে জিএসটি’র থেকেও চালের দরবৃদ্ধিই প্রধান কারণ বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
শিল্পবিহীন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কুটির শিল্প বলতে মুড়ির মিল। আগে গ্রামগঞ্জে বাড়ির মহিলারাই চাল থেকে মুড়ি তৈরি করতেন। বর্তমানে প্রযুক্তির হাত ধরে জেলার প্রত্যেকটি ব্লকে ১৫-২০টি করে মুড়ি তৈরির মিল রয়েছে। গ্রাম বাংলায় মুড়িতে জিএসটির প্রভাব না পড়লেও চালের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় মুড়ির দামও একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে পাইকারি মুড়ি বস্তা বস্তা বিক্রি হতো। কিন্তু বর্তমানে এক ধাক্কায় বিক্রি অনেকটা কমেছে। এদিকে ঝালমুড়ি বিক্রেতারাও কোথাও দাম বাড়িয়েছেন, আবার কোথাও মুড়ি পরিমাণে কমিয়ে বিক্রি করছেন।
এই দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ বেজায় ক্ষুব্ধ। জেলা জুড়ে ছোট মুড়ির মিলে বিক্রি কমে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। মুড়ির মিল মালিকদের অভিযোগ, এক মাস আগেই মুড়ির চাল কুইন্টাল প্রতি ২৮০০ টাকা ছিল। বর্তমানে সেই মুড়ির চাল ৩৮৫০ টাকা কুইন্টাল হয়েছে। তাই খুচরো বাজারে ৬০ টাকা কেজি দরে মুড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যা ৪৫ টাকায় বিক্রি হতো।
হরিরামপুরের এক মুড়ি মিলের মালিক শঙ্কর সরকার বলেন, আমাদের রাজ্যের মধ্যে একমাত্র দুই বর্ধমান জেলাতে মুড়ির চাল হয়ে থাকে। অন্য কোনও জেলায় মুড়ির চাল উৎপাদন কার্যত হয় না। জেলায় যাদের মুড়ির মিল রয়েছে সকলেই মালদহ জেলার মহাজনদের কাছ থেকে মুড়ির চাল নিয়ে এসে মুড়ি তৈরি করে পাইকারি বিক্রি করে থাকে। এখন আমাদের কুইন্টাল প্রতি ৩৮৫০ টাকায় মুড়ির চাল কিনতে হচ্ছে। আমরা পাইকারি মুড়ি বিক্রি করছি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। সেই মুড়ি বাজারে খুচরো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আগে পাইকারি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করতাম। মূলত চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতেই মুড়ির দাম বেড়েছে। আমরাও সব খরচ বাদ দিয়ে সামান্য মুনাফা রেখে পাইকারি বিক্রি করছি। মুড়িতে জিএসটির কথা শুনেছি, কিন্তু সেজন্য আমরা বাড়িয়ে বিক্রি করছি না। মহাজনের কাছে শুনেছি বর্ধমানে মুড়ির চালের জোগান কম, স্টক সেরকম নেই। যতদিন ধান না উঠবে মুড়ির দাম আরও বাড়তে পারে। ধান রোপণের এই সময়ে প্রতিবার আমাদের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হতো। এবারে তলানিতে নেমেছে।
বুনিয়াদপুরের ঝালমুড়ি বিক্রেতা সবুজ মণ্ডল বলেন, বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিদিন ১২ ভাজা দিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করি। শহরের বাসিন্দা থেকে নিত্যযাত্রীরা বিকেল ও সন্ধ্যার টিফিন করেন। এতদিন ১০ টাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করতাম। কিন্তু বর্তমানে ৬০ টাকা কেজি দরে মুড়ি কিনে বিক্রি করছি। পরিমাণে কমিয়ে দেওয়ায় নারাজ ক্রেতারা। আবার ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দাম বাড়ানোয় মুখ বেজার করে সকলে দোকান ছাড়ছেন। বিক্রি অনেকটাই কমেছে। মুড়ি কিনতে জিএসটি লাগছে না। কিন্তু কালোবাজারি শুরু হয়েছে মুড়ির চালের।