বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
বেঙ্গল সাফারি সংলগ্ন এই বস্তির তিনদিক ঘিরে রেখেছে মহানন্দা অভয়ারণ্য, একদিকে তিস্তা নদী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ঠাসা এই গ্রামের বাড়তি পাওনা তিস্তা নদীর ওপারে থাকা মেঘে ঢাকা পাহাড়ের সারি। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখন সেই লালটং ক্রমে আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে উঠছে। দীর্ঘবছর ধরে বিদ্যুতহীন থাকা গ্রামটিতে সম্প্রতি প্লান্ট তৈরি করে সৌরশক্তির মাধ্যমে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন লাইট, ফ্যান চালাতে পারছেন গ্রামবাসীরা। জ্বলছে পথবাতিও। গ্রামের পড়ুয়ারা রাতেও পড়াশোনা করতে পারছে।
রাজগঞ্জ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে পানীয় জলের সমস্যায় জর্জরিত গ্রামে এখন সৌরশক্তি চালিত পরিস্রুত জলের প্লান্ট হয়েছে। ঘরে ঘরে পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। গ্রামে কংক্রিটের রাস্তা হয়েছে। গ্রামটিকে ঘিরে জেলা প্রশাসনের এখনও বিস্তর পরিকল্পনা রয়েছে। বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করে জ্বালানির সমস্যা মেটানো, মুরগির ফার্ম তৈরি করার পরিকল্পনা আছে প্রশাসনের।
কিন্তু, কীভাবে ছোট্ট এই গ্রামটির সেজে ওঠার শুরু? রাজগঞ্জের বিডিও পঙ্কজ কোনার বলেন, গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রশাসনের তরফে লালটং বস্তিতে দুয়ারে সরকার শিবির করা হয়েছিল। সেই সময় প্রথম মহানন্দা অভয়ারণ্যের প্রায় ন’কিমি ভিতরে এই গ্রামে আসি। গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে ও গ্রামের মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনে এলাকার সামাজিক পরিস্থিতি বুঝতে পারি। গ্রামে অন্তত ৩৭টি পরিবার থাকে। তখন থেকেই জেলা প্রশাসন ও রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে গ্রামের জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া শুরু হয়।
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, প্রত্যন্ত ওই গ্রামটিকে মডেল ভিলেজ তৈরি করাই এখন আমাদের পরিকল্পনা। দু’ভাবে আমরা ওই গ্রামের উন্নয়নের কাজ করছি। প্রথমত সামাজিক বিভিন্ন প্রকল্প যেমন রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। দ্বিতীয়ত আর্থিকভাবে যাতে গ্রামের উত্থান হয় তারজন্য প্রাণিপালন ফার্ম তৈরি করা হবে। জলাশয়গুলিকে পরিষ্কার করে মাছ চাষের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
গ্রামবাসী টিকা ছেত্রী, দীপু সাইবু, লীলা শর্মা ছেত্রীরা বলেন, আমরা গ্রামের লোকজন বাইরে গিয়ে তেমন কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত নই। মূলত আমরা গোরু প্রতিপালন করি। গোরুর দুধ সালুগাড়ায় বিক্রি করি। এখন প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘনঘন গ্রামে এসে নানারকম পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছেন। এতে আমরা খুশি। প্রশাসন থেকে বলেছে ১০ হাজার মুরগি পালনের জন্য ফার্ম করে দেবে। এটা হলে গ্রামের লোকেদের আয় বাড়বে।
ব্লক প্রশাসনের তরফে বিডিও জানিয়েছেন, লালটং বস্তিতে হোম স্টে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ জন্য ইচ্ছুক গ্রামবাসীদের নামের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। প্রশাসনের তরফে আগ্রহীদের সহযোগিতা করা হবে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এধরণের কাজকে সবসময় গুরুত্ব দেন। তাঁরই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে লালটং বস্তিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি বিজেপি সাংসদের দত্তক নেওয়া চ্যাংমারি গ্রামের কোনও উন্নয়ন না হওয়ার বিষয় নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও সাংসদ জয়ন্তবাবুর দাবি, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করেনি। তাই কাজ হয়নি। তবে কী ধরনের অসহযোগিতা তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি এমপি।