রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ জুলাই অর্থাৎ শুক্রবার রাতে হোমের দুই আবাসিকের মধ্যে টিভি দেখা নিয়ে ব্যাপক বচসা বাধে। তাদের বচসা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। সেসময় একজন গুরুতর জখম হয়। তার মাথায় চোট লাগে। সিসিটিভি’র ফুটেজ এবং হোম কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে। রাতেই গুরুতর জখম অবস্থায় ওই আবাসিক কিশোরকে নিয়ে যাওয়া হয় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে পরদিন অর্থাৎ শনিবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওইদিন দুপুরেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার রাতে তাকে সেখানে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রবিবার তার মৃত্যু হয়।
হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় একজন অ্যাটেন্ডেন্টকে শো-কজ করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় কর্ণজোড়া ফাঁড়িতে একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিস জেলার সুপার সানা আখতার বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আইপিসি ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এক নাবালককে হেফাজতে নিয়ে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে রবিবার পেশ করা হয়। সেখান থেকে তাকে অন্য একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। হোমের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কর্ণজোড়া সূর্যোদয় সরকারি হোমে ৫০ জন ছেলে এবং ৫০ জন মেয়ের থাকার ব্যবস্থা আছে। বর্তমানে হোমে ১৬ জন মেয়ে আবাসিক রয়েছে। পুরুষ আবাসিকের সংখ্যা ৩৪ জন। পরিকাঠামোর চাইতে অনেক কম সংখ্যক আবাসিক থাকার পরও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাতে যখন ওই দুই কিশোরের মধ্যে ঝামেলা হচ্ছিল তখন হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা কোথায় ছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় হোম কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। হোমের অধ্যক্ষ ওই কিশোরের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলেন। তিনি সেখানেই রয়েছেন বলে হোম সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, সোমবার কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে মৃত কিশোরের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়েছে।
এই ঘটনায় উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনাকে একাধিকার টেলিফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। এমনকী হোয়াটস অ্যাপে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে সূর্যোদয় হোম থেকে আবাসিকদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় মাঝেমধ্যেই নানা কারণে সূর্যোদয় হোম খবরের শিরোনামে উঠে আসত। মাঝে কয়েক বছর সেখানে কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু হঠাৎ করে এরকম একটি মর্মান্তিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ফের এই হোম নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। এধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা আটকাতে হোম কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।