পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অথচ গত বিধানসভা নির্বাচনে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি আট হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। অতবড় জয়ের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও ভোটের ফলাফল নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিজেপির।
এই এলাকায় বেশকিছু অবাঙালি ভোটার রয়েছেন। যাদের একটা বড় অংশ দলের প্রতীক দেখেই ভোট দেন। এজায়গাতেও সঙ্কটে পড়েছে বিজেপি। তাই নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করলেও বিজেপির সব ভোট রঞ্জিত বিশ্বাস আদৌ পাবেন কি না তা নিয়ে ধন্দ বাড়ছে। অভিযোগ, এটা আঁচ করেই বিজেপির ভোট ধরে রাখতে রঞ্জিত বিশ্বাস নির্দল প্রার্থী হিসেবে তাঁর প্রতীক কেটলির মাঝখানে বিজেপির প্রতীক এঁকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তা মুছে দেন। তিনি বলেন, এলাকার মানুষ আমাকে বিজেপির কর্মী হিসেবেই চেনেন। কাজেই ভোট পেতে আমার কোনও সমস্যা হবে না।
গত পাঁচ বছর এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন সিপিএমের মুকুল সেনগুপ্ত। দীর্ঘদিনের কাউন্সিলার মুকুলবাবু শিলিগুড়ি পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মেয়র পরিষদ সদস্যও ছিলেন। এবার আসন সংরক্ষণের কারণে মুকুলবাবু ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর জায়গায় এবার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী সিপিএমের পরেশচন্দ্র সরকার। মুকুলবাবুর ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী হওয়ায় তিনি বাড়তি চাপে পড়ে গিয়েছেন। কারণ ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে কান পাতলে মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে অসংখ্য ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে। পুরসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও মুকুলবাবুর এই ওয়ার্ডে তেমন উন্নতি হয়নি বলে স্থানীয়স্তরে অভিযোগ রয়েছে। শিবনগর, রাজীবনগর, নর্মদাবাগান, উজানু, সমরনগর, পোকাইজ্যোত সহ ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় সিপিএমের গতবারের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ। কেউ বলছেন, পানীয় জল পাননি, কারও অভিযোগ বেহাল রাস্তা নিয়ে। পোকাইজ্যোতের বাসুদেব রায়, রাজীবনগরের সঞ্জয় শা বলেন, বর্ষাকালে এই এলাকায় দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। চারদিকে জল জমে যায়। রয়েছে মশার উপদ্রব। উজানুর বাসিন্দা দ্বীপেন রায় বলেন, রাস্তাঘাট বেহাল, বারবার বলার পরেও কোনও কাজ হয়নি। রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটের জন্য কাউন্সিলারকে পাওয়া যায় না। জ্যোতি নগরের বাসিন্দা রমেশ দাস বলেন, রাস্তা উঁচু করায় দুই ধারের বাড়ি ঘরে একটু বৃষ্টিতেই জল ঢুকে যাচ্ছে। এবার সবকিছু ভেবেচিন্তে ভোট দিতে হবে।
এই ওয়ার্ডে এক সময় কংগ্রেসের কাউন্সিলার ছিলেন শিখা রায়। তিনি গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, বিজেপি টিকিট না দেওয়ায় পুরনো দলে ফিরে এবার তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। শিখাদেবীর দাবি, ২০০৯ সালে কাউন্সিলার হয়ে এই ওয়ার্ডের ব্যাপক কাজ করেছেন।
সেই দিক থেকে তৃণমূল অনেকটাই স্বস্তিদায়ক জায়গায় রয়েছে। এবার তাদের প্রার্থী দিলীপ বর্মন রাজ্যের তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের বার্তাই প্রচারে তুলছেন। তাঁর হাতিয়ার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের লক্ষীর ভান্ডার, দুয়ারে সরকার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী প্রকল্প। তবে কাঁটা রয়েছে তৃণমূলেরও। বিক্ষুব্ধ নেত্রী মল্লিকা দেবনাথ দিলীপ বর্মনকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। মল্লিকাদেবীর অভিযোগ, গত পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থীকে হারাতে এই দিলীপ বর্মন বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ৯৭৯ টি ভোট কেটেছিলেন। দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় মল্লিকা দেবনাথকে দল সাসপেন্ড করেছে। ভোটের ময়দানে চলছে সেসবের হিসেবনিকেশও।