সংবাদদাতা, গাজোল: সন্ধ্যার পরই অন্ধকারে ডুবে যায় পুরাতন  মালদহ ব্লকের নতুন বাইপাস। ফলে শীতের মরশুমে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা হলেই বাইপাস লাগোয়া মঙ্গলবাড়ি ও সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোট সুজাপুর, সুজাপুর, নিত্যানন্দপুর, মাধাইপুর, রসিলাদহ, বেহুলা রোড কলোনি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়। এর ফলে ওই এলাকাগুলিতে সন্ধ্যার পর থেকে পথচারী ও গ্রামবাসীদের কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এনিয়ে অনেকেই ভীত হয়ে পড়েছেন। অন্ধকারে বাইপাসের চলন্ত গাড়ির হেডলাইট সাইকেল, বাইক আরোহীদের সরাসরি চোখে এসে পড়ে বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁরা দ্রুত বাইপাসে পর্যাপ্ত পথবাতির দাবি তুলেছেন। যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী দিনে ওই এলাকায় বাতিস্তম্ভ বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
বাইপাস রোড সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা অপূর্ব রায়, ইয়াসিন আলি বলেন, সদর এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের সদর এলাকায় ঢুকলে অন্যচিত্র। কয়েক কিমিজুড়ে আলোর ব্যবস্থা নেই। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়, সন্ধ্যার পর যানবাহনগুলি নিয়ে। ট্রাক, লরিচালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান। এজন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে খুবই ভয় লাগে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। নতুন বাইপাস হয়েছে। এবার আলোর বিষয়টি নজর দেওয়া উচিত। এখানে ইংলিশবাজারের রথবাড়ির মতো ঘন ঘন বাতিস্তম্ভ প্রয়োজন। সকলেরই বিষয়টি ভাবা উচিত।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার কুমার নাগ বলেন, নারায়ণপুর মোড়ে আলো বসানো হয়েছে। তারপর থেকে কাজ হয়নি। ওটা গ্রামীণ সড়ক এলাকা। রোডের ধারে গ্রামগুলিজুড়ে বাতি বসানোর তেমন জায়গা পাওয়া যায় না। তাই এমন হয়ে রয়েছে। শহর এলাকায় হলে নানা সুবিধা থাকে। তখন কাজ সহজ হয়। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ভাবতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী দিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের রুলেখা বিবি বলেন, ওই এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। অনেকের যাতায়াতে সমস্যা হয়, এটা জানি। আমি ওই এলাকায় গ্রাম সংসদ সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে দ্রুত কথা বলব। তাদের কাছে প্রকল্প চাইব। এরপর এটা আমরা অর্থবর্ষের অ্যাকশন প্ল্যানে ধরব। আগামী দিনে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির উকিল মণ্ডল বলেন, সম্প্রতি আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। যদিও এখনও আমি প্রধান। সেই হিসেবে বলছি, সব কিছু স্বাভাবিক হলে আগামী দিনে আলোর এই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। 
প্রসঙ্গত, মালদহবাসীকে যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বিকল্প রুট হিসেবে পুরাতন মালদহজুড়ে নতুন বাইপাস তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ যানবাহন এই বাইপাস দিয়েই চলাচল করে। কিন্তু বাইপাসের মঙ্গলবাড়ি, সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়তের কয়েক কিমি পথজুড়ে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। সেজন্য মানুষকে প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবি, ধীরে ধীরে বাইপাস এলাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য ইংলিশবাজার জাতীয় সড়কের রথবাড়ি এলাকার মতো উন্নত বাতিস্তম্ভ দিয়ে এই বাইপাস সাজিয়ে দেওয়া হোক। এতে দুর্ঘটনা কমবে।