সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ও তিস্তায় জলস্ফীতিতে ময়নাগুড়ি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ঢুকে যায়। ব্লকের দোমোহনি-১, ২, পদমতী-১, ২, বার্নিশ, ধর্মপুরের অধিকাংশ বাড়িতেই বুধবার বিকেল পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে থাকে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জেরে প্রায় ১৫ হাজার লোক জলবন্দি হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নিয়ে ব্লক প্রশাসন দুর্গতদের উদ্ধার কাজে নামে। বেশকিছু এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে উঁচু জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধার কাজের পাশাপাশি ত্রাণের ব্যবস্থা করে ব্লক প্রশাসন। তিস্তায় জল বাড়ায় ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনি-১, পদমতি-১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার স্পার বাঁধ ভেঙে যায়। এর ফলে বসত এলাকায় তিস্তা নদীর জল ঢুকে যায়। কয়েক হাজার বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায় চলে যায়। বুধবার সকালে ওই সব এলাকায় যান বিডিও শুভ্র নন্দী, ময়নাগুড়ির পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিবম রায় বসুনিয়া, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বিমলেন্দু চৌধুরীরা। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন এলাকায় নদীর জল ঢুকতেই লোকজন ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ শুরু করে। অনেকেই স্থানীয়দের নৌকার সাহায্যে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। তিস্তার বাঁধে গবাদি পশু রাখার ব্যবস্থা করেন তাঁরা। ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসন থেকে ত্রিপল ও শুকনো খাবার এদিন পৌঁছে দেওয়া হয়।
পদমতি গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ সরকার, দিলীপ রায় বলেন, ২০-২৫ বছরে নদীর জল এত ভয়ঙ্করভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে বলে মনে পড়ছে না। আমাদের চাষের জমি জলের নিচে চলে গিয়েছে। ফসলের প্রচুর ক্ষতি হল। প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে রাতেই বেরিয়ে যাই। ঘরে মজুত রাখা খাবার সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা যাতে নষ্ট ফসলের দাম পাই তারজন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি রাখব। গাবাদি পশুও ভেসে গিয়েছে।